যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, সৌদি আরব এ বছরের মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে। তিনি এও জানান যে, সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী।
এই দাবি তিনি গত ১৫ অক্টোবর টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন। সাক্ষাৎকারটি আজ (২৩ অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি আমরা সৌদি আরব ও ইসরায়েলের সম্পর্কের খুব কাছাকাছি পৌঁছেছি। আমি নিশ্চিত যে সৌদি নেতৃত্বে এই সম্পর্ক স্থাপন হবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সৌদি আরবের কিছু পুরনো সমস্যা যেমন গাজা ও ইরান সংক্রান্ত সমস্যাগুলি এখন আর তাদের মধ্যে নেই, যা সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্কের উন্নতির পথ প্রশস্ত করেছে।
ট্রাম্পের দাবি, সৌদি আরব এবং ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপন করা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। তিনি প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, “হ্যাঁ, আমি বিশ্বাস করি সৌদি আরব খুব শীঘ্রই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবে।”
এছাড়া, ট্রাম্প সাক্ষাৎকারে ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন। তিনি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে ফিলিস্তিনিদের প্রকৃত নেতা হিসেবে বিবেচনা করেন না। ট্রাম্প বলেন, “এ মুহূর্তে ফিলিস্তিনিদের কোনো দৃশ্যমান নেতা নেই। যেসব নেতা দৃশ্যমান হওয়ার চেষ্টা করেছেন, তাদের অধিকাংশই হত্যা করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই জটিল, এবং তাদের ভবিষ্যতের নেতা কোথায় বা কেমন হবে তা এখনই বলা কঠিন।”
ট্রাম্প টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিবেদককে জানান যে, তিনি ফিলিস্তিনের জনপ্রিয় নেতা মারওয়ান বারঘুতির মুক্তি নিয়ে ভাবছেন। ইসরায়েলি বাহিনী মারওয়ান বারঘুতিকে গ্রেপ্তার করেছে, এবং ট্রাম্প এই ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আপনাকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার মাত্র ১৫ মিনিট আগে আমি এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলাম, এবং আমি এ বিষয়ে শীঘ্রই একটি সিদ্ধান্ত নেব।”
এই দাবি, বিশেষ করে সৌদি আরব ও ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে, মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনগুলির পূর্বাভাস দিতে পারে। সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, তবে গত কয়েক বছরে তাদের অবস্থান কিছুটা নমনীয় হয়েছে, বিশেষ করে ইরানকে মোকাবিলার ক্ষেত্রে।
এদিকে, ট্রাম্পের মন্তব্যের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন ও ফিলিস্তিন বিষয়ে তাদের নীতি সম্পর্কিত আগের অবস্থানগুলোও সম্পর্কিত। বিশেষ করে, গত বছর ট্রাম্পের প্রশাসন ইসরায়েলকে পশ্চিমতীরের কিছু অংশ দখল করার অনুমতি দেয়, যা আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল।
মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব ও ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপন হলে তা অনেক দেশের ভূরাজনৈতিক অবস্থান এবং শান্তি প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ফিলিস্তিনের নেতৃত্ব এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনার ব্যাপারে মন্তব্যের মাধ্যমে, ট্রাম্প আবারও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সংকট এবং তার দেশের নীতির উপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেছেন।