গাজীপুরের একটি মসজিদের খতিবকে গুম করে হত্যাচেষ্টার ঘটনার প্রতিবাদে এবং ইসকন (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর ক্রাইস্টিয়ান কনশাসনেস) নিষিদ্ধের দাবিতে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ ও মানববন্ধনটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি ছাত্র হল থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে এবং তাদের অবস্থান তুলে ধরে নানা স্লোগান দেন, যেমন—“উগ্রবাদী সন্ত্রাসী”, “ইসকনের ঠাঁই নাই”, “ইসকন জঙ্গী”, “স্বৈরাচারের সঙ্গী” ইত্যাদি।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থীরা, যারা ইসকনসহ বিভিন্ন উগ্রবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত এই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী মো. ইসমাঈল হোসেন বলেন, “সম্প্রতি গাজীপুরের আশা মনি ধর্ষণ ও ধর্ষণের প্রতিবাদে ইমামকে গুম ও হত্যাচেষ্টার ঘটনার তদন্তে যে নাম উঠে এসেছে, তা হলো ইসকন। এই সংগঠনটি ভারতের মদদপুষ্ট উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠন, যার বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে শিশু নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে। বাংলাদেশে আসার পর তারা নানা ধরনের সহিংস কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মন্দির জোরপূর্বক দখল করার অভিযোগও রয়েছে। ২০১৪ সালে তারা তারাবির নামাজে বাধা দিয়েছে, ২০১৬ সালে মুসলিমদের ওপর গুলি বর্ষণ করেছে, এবং মুসলিম মেয়েদের ‘ভাগাওয়া লাভ ট্র্যাপ’ এর মাধ্যমে চরিত্রহননসহ দেশবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। এমনকি আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডেও ইসকনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদী কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।”
কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক লিটন আকন্দ বলেন, “শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছেন, কিন্তু ইসকনের মতো সন্ত্রাসী সংগঠন রেখে গেছেন। আমাদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব এই সন্ত্রাসী সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করা হোক।”
সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহাদ আহমেদ বলেন, “৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পালানোর পর ইসকনের কালো হাতের সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে, কিন্তু তারা এখনও বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভাঙার চেষ্টা করছে। তারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। তাই আমরা ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানাই।”
এছাড়া, মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং নেতাকর্মীরা। তারা সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে একযোগে প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের নিষিদ্ধ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
এ ধরনের কর্মসূচি দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সম্প্রতি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রভাব বিস্তার নিয়ে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।