পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এর সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত নতুন একটি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যখন দেশটির অধিনায়কত্ব নিয়ে নানা আলোচনা চলছে, তখন পিসিবি এক অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ নিয়েছে। পিসিবি শান মাসুদকে “ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট এন্ড প্লেয়ার্স অ্যাফেয়ার্স” কনসালট্যান্ট পদে নিয়োগ দিয়েছে। এর আগেও তিনি পাকিস্তান ক্রিকেট দলের টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিসিবি জানায়, শান মাসুদকে এই নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট দলের সঙ্গে একটি মধ্যাহ্ন ভোজের অনুষ্ঠানে পিসিবির চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি এই নিয়োগের কথা ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফও উপস্থিত ছিলেন। তবে, এই পদে শান মাসুদের দায়িত্ব কী হবে, তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি।
এটি এমন একটি সময়ে ঘোষণা করা হয়েছে, যখন পিসিবি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বিভিন্ন ক্ষেত্রে একাধিক পরিবর্তন আনতে চাইছে। এর আগে, পিসিবির ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন উসমান ওয়াহলা, কিন্তু কিছু বিতর্কের পর তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বিশেষত, ভারত ও পাকিস্তান ক্রিকেট দলের মধ্যে এশিয়া কাপের হাত না মেলার বিতর্কের পর আইসিসির সঙ্গে যথাযথ যোগাযোগ না রাখার কারণে ওয়াহলাকে বরখাস্ত করা হয়।
ওয়াহলার পদত্যাগের এক মাস পর, শান মাসুদকে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, ‘নো হ্যান্ডশেক’ বিতর্ক নিয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠাতে ব্যর্থ হওয়ায় ওয়াহলাকে সরানো হয়েছিল। পিসিবির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা নিয়ে বেশ হতাশ ছিল, যা তাকে বরখাস্ত করার দিকে নিয়ে গিয়েছিল।
এশিয়া কাপের সময়, ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব এবং পাকিস্তানি অধিনায়ক সালমান আলি আগার হাত না মেলার ঘটনাটি অনেক আলোচনা সৃষ্টি করেছিল। পিসিবি এই ঘটনায় ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল এবং আইসিসি ও মেরিলবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) কাছে তার এশিয়া কাপ থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানায়। তবে শেষ পর্যন্ত এই বিতর্কের সুরাহা হয়।
এদিকে, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে হ্যান্ডশেক না করার এই ঘটনা এখনও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এশিয়া কাপের ফাইনালসহ, ভারত ও পাকিস্তানের তিনটি ম্যাচে ভারতের জয় নিশ্চিত হয়েছে। শিরোপা জয়ের পর ভারত পিসিবি এবং এসিসি (এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল) সভাপতির কাছ থেকে ট্রফি অস্বীকার করেছিল। পরে, কয়েকটি নাটকীয়তার পর পিসিবির চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি সেই ট্রফি হাতে নিয়ে যান। এই ঘটনায় ভারতের পক্ষ থেকে বারবার চিঠি দেওয়ার পরও সুরাহা হয়নি, এবং শেষে নাকভি ভারতীয় অধিনায়ককে সরাসরি গিয়ে ট্রফি নেওয়ার শর্ত দেন।
পিসিবির এই সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত এবং সৃষ্ট বিতর্ক নিয়ে আলোচনা চলছেই। শান মাসুদের নতুন পদক্ষেপ এবং পিসিবির সামগ্রিক কৌশল ভবিষ্যতে পাকিস্তান ক্রিকেটের বিভিন্ন দিক পরিবর্তন করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।