সুইজারল্যান্ড আগামী বছর থেকে তার অভিবাসন নীতির আওতায় আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য একটি নতুন কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে যাচ্ছে। এই নীতি অনুযায়ী, দেশটি এখন থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের তাদের নিজ দেশ বা তৃতীয় কোনো দেশে ভ্রমণের অনুমতি দেবে না, তবে জরুরি পরিস্থিতির ক্ষেত্রে বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে ভ্রমণের সুযোগ থাকবে।
এই নতুন নিয়মের আওতায় সব আশ্রয়প্রার্থী, অস্থায়ী সুরক্ষা পাওয়া এবং সুরক্ষার প্রয়োজন এমন ব্যক্তিদের ওপর প্রযোজ্য হবে। তবে আত্মীয়-স্বজনের মৃত্যুর মতো জরুরি পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ভ্রমণের জন্য সুইজারল্যান্ডের অভিবাসন বিষয়ক সচিবালয় (এসইএম)-এ অনুমতি চেয়ে আবেদন করতে পারবেন। এই সংস্থা আবেদনটি যাচাই-বাছাই করে অনুমতি প্রদান করবে।
এই সিদ্ধান্তটি সুইজারল্যান্ডের পার্লামেন্টে বুধবার (২৪ অক্টোবর) গৃহীত এক সিদ্ধান্তের আলোকে নেওয়া হয়েছে এবং ২০২৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারির পর এটি চূড়ান্তভাবে কার্যকর হবে। দেশটির ফেডারেল কাউন্সিল জানিয়েছে, এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো ২০২১ সালে সুইস পার্লামেন্টে অনুমোদিত বিদেশি নাগরিক ও অন্তর্ভুক্তি আইন বাস্তবায়ন করা।
রাশিয়ার আক্রমণের পর ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের জন্য কিছুটা শিথিল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাদের জন্য প্রতি ছয় মাসে ১৫ দিন ইউক্রেনে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে। বর্তমানে, এই সুবিধাটি ইউক্রেনীয়দের জন্য প্রতি তিন মাসে ১৫ দিন পর্যন্ত ছিল। এর মাধ্যমে সুইজারল্যান্ড ইউক্রেনীয় শরণার্থীদেরকে তাদের দেশে ফিরতে কিছুটা সহায়তা করবে, তবে এটি কোনো স্থায়ী ভ্রমণ নয়।
এই নতুন নীতির প্রস্তাবটি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে কিছু প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। ইউএনএইচসিআর বলছে, এটি অসম এবং অনৈতিক হতে পারে, কারণ অনেক শরণার্থী পরিবারের সদস্যরা নির্যাতন ও বিচ্ছিন্নতার শিকার হয়ে পালিয়ে এসেছেন, এবং এই নিষেধাজ্ঞা তাদের পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলবে।
এমন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ইতোমধ্যে জার্মানি এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলিতে প্রযোজ্য রয়েছে। তবে সুইজারল্যান্ডের নতুন নিয়মটি কিছু বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া নিজ দেশ বা তৃতীয় দেশের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রযোজ্য হবে।
সুইজারল্যান্ডের নতুন অভিবাসন নীতি আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে। তবে জরুরি পরিস্থিতিতে কিছু বিশেষ অনুমতির সুযোগ থাকবে। ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের জন্য কিছু শিথিলতা রাখা হলেও, জাতিসংঘ এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া এসেছে।