লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব শেষ হয়ে গেছে কিছুদিন আগেই এবং বর্তমানে ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য দলগুলো প্রীতি ম্যাচের দিকে মনোযোগ দিয়েছে। বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা গত অক্টোবরে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছে এবং আগামী নভেম্বরে আরও একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে, যার প্রতিপক্ষ হিসেবে আফ্রিকার দেশ অ্যাঙ্গোলা।
আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) গতকাল (শুক্রবার) তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই প্রীতি ম্যাচের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। প্রথমে আর্জেন্টিনার পরিকল্পনা ছিল দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলার, তবে উপযুক্ত প্রতিপক্ষ না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত একটি ম্যাচই খেলবে লিওনেল মেসির দল।
আগামী ১৪ নভেম্বর অ্যাঙ্গোলার রাজধানী লুয়ান্ডায় এই প্রীতি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। যদিও সময় এখনও নির্ধারিত হয়নি, তবে ম্যাচটি ফিফা উইন্ডোর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এ ম্যাচে আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি দলের বিভিন্ন ফুটবলারকে পরীক্ষা করবেন, যাদের মধ্যে কয়েকজন ২০২২ বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ পড়েছেন, আবার বেশ কয়েকজন নতুনও জায়গা পেয়েছেন।
লিওনেল স্কালোনির লক্ষ্য ২০২৬ বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়। এজন্য তিনি দলের ভারসাম্য এবং ছন্দ বজায় রাখার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন। মেসির মতো তারকা খেলোয়াড়দের উপযুক্ত বিশ্রাম দিয়ে তারা বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে চান। এমনকি, স্কালোনি মেসিকে নিয়মিত না খেলানোর সিদ্ধান্তও নিতে পারেন, যাতে তার শারীরিক অবস্থার ওপর চাপ না পড়ে।
অক্টোবরের দুটি প্রীতি ম্যাচে মেসি এবং আর্জেন্টিনার পারফরম্যান্স ছিল মিশ্র। প্রথম ম্যাচে মেসি ছাড়াই ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে ১-০ ব্যবধানে জয় পায় আর্জেন্টিনা। এরপর পুয়ের্তো রিকোর বিপক্ষে ৬-০ ব্যবধানে দারুণ একটি জয় তুলে নেয় তারা, যেখানে মেসি মাঠে ছিলেন। এই জয়গুলো দলের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করেছে, তবে কোচ স্কালোনি মূলত দলের গভীরতা এবং ভারসাম্য যাচাই করতে চেয়েছেন।
নভেম্বরে আর্জেন্টিনা আফ্রিকার মাটিতে ম্যাচটি খেলবে, তবে তাদের মূল প্রস্তুতি হবে ইউরোপে। স্পেনে ক্যাম্প করে তারা এই ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নেবে। ম্যাচের পর আর্জেন্টিনা ইউরোপে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত অনুশীলন চালাবে, যেটি ফিফা উইন্ডোর শেষ দিন হবে।
২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য আর্জেন্টিনা ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ আয়োজনের চুক্তি করেছে। এই ম্যাচগুলো হবে মেক্সিকো ও হন্ডুরাসের বিপক্ষে, যা হবে তাদের বিদায়ী প্রস্তুতি ম্যাচ। এই প্রস্তুতি ম্যাচগুলোর মাধ্যমে স্কালোনি তার দলের বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত করবে।
আগামী বছর ‘ফিনালিসিমা’তে আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হবে ইউরো চ্যাম্পিয়ন স্পেনের সঙ্গে। যদিও ম্যাচটির তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি, ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এই ম্যাচটি ২০২৬ সালের ২৮ মার্চ কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে পারে। এই ম্যাচটি আর্জেন্টিনার জন্য একটি বড় প্রস্তুতি হিসেবে কাজ করবে, যা বিশ্বকাপের আগে তাদের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ প্রস্তুতি চলমান রয়েছে এবং তারা ২০২৬ বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রীতি ম্যাচ, স্কোয়াডে ভারসাম্য তৈরি, মেসির বিশ্রাম এবং অন্যান্য খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া—এই সবই তাদের প্রস্তুতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য আর্জেন্টিনার প্রস্তুতি তাই এখনো শেষ হয়নি, তবে তারা আত্মবিশ্বাসী যে বিশ্বকাপের মঞ্চে সফল হতে পারবে।