বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান শনিবার (২৫ অক্টোবর) সিরাজগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামী সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার ষান্মাসিক রুকন সম্মেলনে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, যদি জামায়াত জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়, তবে তাদের প্রথম অঙ্গীকার হবে, “আমরা রাজা হবো না, জনগণকে প্রজা বানাবো না। আমরা হবো জনগণের সেবক, আর জনগণ হবে আমাদের ভাই-বন্ধু।”
রফিকুল ইসলাম খান আরো বলেন, জামায়াতের নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, যদি দুর্নীতি বন্ধ করা যায়। তিনি উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশের মানুষ চায় দুর্নীতিমুক্ত দেশ।” একই সঙ্গে, তিনি দলের পরিকল্পনা তুলে ধরেন, যেখানে বেকার সমস্যার সমাধানে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে মিল-কলকারখানা স্থাপন ও ১৮ কোটি মানুষের শক্তি কাজে লাগানো হবে। জামায়াতের লক্ষ্য, দেশের প্রতিটি নাগরিককে কর্মসংস্থান দেয়া।
নারী শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, “মা জাতির মর্যাদা সবার উপরে। মেয়েরা শিক্ষা, বিসিএস, আর্মি, সচিব বা ব্যাংকের ম্যানেজার হতে পারবে।” জামায়াতের লক্ষ্য নারী-পুরুষ সবার সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করা।
অমুসলিম নাগরিকদের প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা তাদের সংখ্যালঘু মনে করি না। তারা এই দেশের নাগরিক, এদেশে জন্ম নেওয়া প্রতিটি মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে।” এটি জামায়াতের পক্ষ থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি সমতা ও অধিকার প্রদানের অঙ্গীকার ছিল।
তিনি বলেন, “আমরা একটি আধুনিক ও মানবিক ইসলামী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।” জামায়াত চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও দুর্নীতিবাজ মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চায়। এই উদ্দেশ্যে জামায়াত ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে, যা দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। তিনি আরও বলেন, “এই দেশ ১৮ কোটি মানুষের দেশ, কারো বাপের নয়, কোনো বিশেষ পরিবারেরও নয়।”
সম্মেলনের সভাপতি সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহিনুর আলম ছিলেন, এবং অনুষ্ঠানে জেলা, শহর, পৌর ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রফিকুল ইসলাম খান এর বক্তৃতায় জামায়াতের লক্ষ্য পরিষ্কার—একটি আধুনিক ও দুর্নীতিমুক্ত ইসলামী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা, যেখানে সকল নাগরিকের সমান অধিকার থাকবে এবং জনগণই সরকার পরিচালনার মূল শক্তি হিসেবে কাজ করবে।