1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
অর্থবছরের শেষ ৬ মাসে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের আশাব্যঞ্জক লক্ষণ : জিইডি জুলাই কন্যা সম্মেলন ২০২৫ উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে প্রস্তুতি সম্পন্ন মোহাম্মদ সালাহকে স্কোয়াডের বাইরে রেখে ইন্টার মিলান ম্যাচে নামছে লিভারপুল কসমোপ্রফ-ভারত ২০২৫-এ বাংলাদেশি কসমেটিকস পণ্যের সফল প্রদর্শন বেগম রোকেয়ার আদর্শে নারীর অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাঈদ হত্যায় আজ ট্রাইব্যুনালে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর স্থাপনায় ইসরায়েলের ব্যাপক বিমান হামলা বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে তারেক রহমানের শ্রদ্ধা নিবেদন গাজায় ইসরায়েলি হামলায় দুই ফিলিস্তিনি নিহত, আহত বহু হাইকোর্টে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন স্থগিত চাওয়ার রিট উত্থাপিত হয়নি, আবেদন খারিজ

গৌতম আদানির ব্যবসায় ভারতের সরকারি সহায়তা: নতুন বিতর্কের সৃষ্টি

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২৬ বার দেখা হয়েছে

ভারতের শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির ব্যবসায় ঋণের চাপ বৃদ্ধির মাঝে ভারত সরকার নীরবে তার প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। চলতি বছরের প্রথম দিকে, যখন আদানির বিরুদ্ধে বিদেশে মামলা ও শেয়ারবাজারে অভিযোগ উঠছিল, ভারত সরকার তা মোকাবিলায় একটি বিশাল আর্থিক পদক্ষেপ নিয়েছিল। বিশেষ করে, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান লাইফ ইনস্যুরেন্স করপোরেশন অব ইন্ডিয়া (এলআইসি) গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গ্রুপে প্রায় ৩৯০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই পদক্ষেপ সরকারের এবং আদানির ব্যবসায়িক সম্পর্কের একটি নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (ডিএফএস) মে মাসে আদানি গ্রুপে এই বিনিয়োগের পরিকল্পনা করে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এলআইসি সরকারী প্রতিষ্ঠান হলেও সাধারণত দরিদ্র জনগণের জন্য জীবনবিমা সেবা প্রদান করে। অথচ, সেই প্রতিষ্ঠানটি গৌতম আদানির কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে যখন আদানির ব্যবসায় ঋণ চাপ বেড়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয় ও করপোরেট খাতের বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলেছেন, এই বিনিয়োগ কি জনগণের অর্থের অপব্যবহার নয়? বিশেষ করে, যখন এলআইসি-র মূল লক্ষ্য দরিদ্র মানুষের সুরক্ষা দেওয়া এবং এই বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।


ভারত সরকার এবং নীতি আয়োগের পরিকল্পনা ছিল, আদানির বিরুদ্ধে চলমান আর্থিক সংকট মোকাবিলায় এবং বাজারে আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য এই বিনিয়োগ করা। ডিএফএস-এর ভাষায়, তাদের লক্ষ্য ছিল আদানি গ্রুপের প্রতি পুনরায় বাজারের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা। আদানি গ্রুপের ঋণ গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল, যার ফলে তার আর্থিক অবস্থা কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল।

এলআইসি-র বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে আদানি গ্রুপের জন্য কিছুটা স্বস্তি এসেছে। তবে, এই পদক্ষেপটি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার, বিশেষ করে যখন আদানি গ্রুপের শেয়ারবাজারের অবস্থান নাজুক ছিল এবং আন্তর্জাতিক আদালতে মামলার মুখোমুখি হচ্ছিল।


এলআইসি এবং সরকারের এই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়ে আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি কোনো বিশেষ সহায়তা নয়, বরং এলআইসি বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে থাকে এবং এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া তাদের রুটিন কাজের অংশ। আদানি গ্রুপের দাবি, এলআইসি তাদের বিনিয়োগে লাভজনক ফলাফল অর্জন করেছে এবং এই পদক্ষেপের মধ্যে কোনো অস্বাভাবিক কিছু নেই।

তবে, কুশ আমিন, আইনবিশেষজ্ঞ এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি, বলেন, “এলআইসি, যেটি মূলত দরিদ্র জনগণের জন্য জীবনবিমা সেবা প্রদান করে, তার জন্য এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ করা দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক। এটি তাদের প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য এবং দায়বদ্ধতার পরিপন্থী।”


গৌতম আদানি ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে, যা গুজরাটে তাদের রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু হয়েছিল। আদানি গ্রুপের বিমান ২০১৪ সালে মোদির নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার করা হয়েছিল, যা নিয়ে বিরোধীরা সব সময় প্রশ্ন তুলেছেন। আদানি গ্রুপের বিপুল ক্ষমতা এবং ভারত সরকারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় ‘স্বজনতোষণ’ বা নেপোটিজমের অভিযোগ উত্থাপন করেছে।


গৌতম আদানি আজ ভারতের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তার গ্রুপের অধীনে দেশটির ২৭ শতাংশ পণ্য পরিবহন হয়, এবং তিনি বিদ্যুৎ ও নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে সবচেয়ে বড় বেসরকারি বিনিয়োগকারী। ২০২২ সালে, আদানি এনডিটিভি নামে ভারতের একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল অধিগ্রহণ করেছিলেন, যা তার ব্যবসায়িক প্রভাবের নতুন দিক উন্মোচিত করে।


ভারতের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আদানির ব্যবসা ও সরকারের মধ্যে সম্পর্ককে ক্রমেই ‘স্বজনতোষণ-ভিত্তিক পুঁজিবাদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে। তাদের মতে, ভারতের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিবেশে এই ধরনের ‘স্পষ্ট সম্পর্ক’ দেশের জনগণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।


গৌতম আদানি এবং ভারতের সরকারের মধ্যে সম্পর্ক দেশটির করপোরেট খাতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলছে। এলআইসি-এর মাধ্যমে আদানির ব্যবসায় সহায়তা প্রদান এবং এর পিছনের সরকারের ভূমিকা এখন বড় বিতর্কের বিষয়। তবে, আদানি গ্রুপ এবং ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও, আন্তর্জাতিক মহলে এই সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নের ঝড় বইছে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com