অর্থনীতি ডেস্ক
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)-এর ২০২৫–২০২৭ মেয়াদের নির্বাচনে এনামুল হক খান দোলন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সোমবার (৩ নভেম্বর) বাজুস নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন পরিচালনা পর্ষদের নাম ঘোষণা করেন।
২০২৩ সালের এপ্রিলে বর্তমান বাজুস কমিটি দোলনকে সংগঠনের সব দায়িত্বপ্রাপ্ত পদ থেকে বহিষ্কার করেছিল। তিনি তখন কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। সম্প্রতি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাকে পুনরায় সদস্যপদে বহাল করা হয়। পরবর্তীতে সমঝোতার ভিত্তিতে সভাপতি পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
নির্বাচন বোর্ডের ঘোষণায় বলা হয়, নির্ধারিত সময়সীমা শেষে কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা ২০২৫ অনুযায়ী বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা নির্বাচিত পদের সমান হওয়ায় ৩৫ জন প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন কমিটিতে সভাপতির পাশাপাশি একজন সিনিয়র সহ-সভাপতি, তিনজন সহ-সভাপতি, একজন কোষাধ্যক্ষ ও ২৯ জন পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, এবার বাজুসে সাধারণ সম্পাদক পদটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। সংগঠনটির ইতিহাসে এই প্রথম সাধারণ সম্পাদক ছাড়াই কমিটি গঠিত হলো।
কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন সানন্দা জুয়েলার্স (প্রা.)-এর রনজিৎ ঘোষ। সহ-সভাপতি হয়েছেন আপন ডায়মন্ড হাউজের আজাদ আহমেদ, জড়োয়া হাউজ (প্রা.) লিমিটেডের অভি রায় এবং জেসিএক্স গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডের ইকবাল হোসেন চৌধুরী। কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত হয়েছেন নিউ ফেন্সী জুয়েলার্সের অমিত ঘোষ।
এছাড়া পরিচালক পদে নির্বাচিতদের মধ্যে রয়েছেন নিউ ফেন্সি জুয়েলার্সের অমিত ঘোষ, দি মিলন জুয়েলার্সের মো. মিলন মিয়া, নীতাঞ্জলী জুয়েলার্সের পবন কুমার আগারওয়াল, নিউ আল ইসলাম জুয়েলার্সের তানভীর রহমান, নিউ সোনার তরী জুয়েলার্সের মো. লিটন হাওলাদার, মেসার্স লিলি জুয়েলার্সের বাবলু দত্ত, গৌরস জুয়েলার্সের গণেশ দেবনাথ, দি মুক্তা জুয়েলার্সের আশিস কুমার মন্ডল, ডায়মন্ড সিলেকশন-এর মিজানুর রহমান, বিপুল জুয়েলার্স-এর বিকাশ ঘোষ, কুঞ্জ জুয়েলার্স-এর সুশান্ত চন্দ্র দে, মেসার্স আলভী জুয়েলার্স-এর মোস্তফা কালাম, নিউ সানন্দা জুয়েলার্স-এর ধনরঞ্জন সাহা, ডি ডামাস দি আর্ট অফ জুয়েলারি-এর শ্রীবাস রায়, ড্রিম ইন্সট্রুমেন্ট টেকনোলজির মো. আলী হোসেন, রিজভী জুয়েলার্স-এর মো. রুবেল, আনন্দ জুয়েলার্স-এর মো. নয়ন চৌধুরী, রিয়া জুয়েলার্স-এর মো. ছালাম, এস জি এল ল্যাব বাংলাদেশ-এর ফাহাদ কামাল লিংকন, আফতাব জুয়েলার্স-এর গৌতম ঘোষ, মানি মালা জুয়েলার্স-এর মো. রবিউল ইসলাম, পরমা জুয়েলার্স-এর মো. তারেকুল ইসলাম চৌধুরী, রোজ জুয়েলার্স-এর মো. নাসের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, আশরাফ জুয়েলার্স-এর মো. রফিকুল ইসলাম, ট্রাস্ট গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড (প্রা.) লিমিটেড-এর সৌমেন সাহা, দি মদিনা জুয়েলার্স-এর আককাছ আলী, রিগেল স্কাই গোল্ড অ্যান্ড জুয়েলার্স-এর মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, আল বারাকা জুয়েলার্স-২ এর শাওন আহম্মেদ চৌধুরী, আদর জুয়েলার্স-এর মো. নাজমুল হুদা লতিফ এবং আমন্ত্রণ জুয়েলার্স-এর পলাশ কুমার সাহা।
নির্বাচন সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৈধ প্রার্থীদের মধ্য থেকে কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় বাণিজ্য সংগঠনের বিধিমালা-২০২৫ এর ২৪(১) ধারা অনুযায়ী প্রার্থীদের সবাইকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন সভাপতি এনামুল হক খান দোলন বলেন, দেশে সোনা আমদানির অনুমতি থাকলেও প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল হওয়ায় ব্যবসায়ীরা তা ব্যবহার করতে আগ্রহী নন। তিনি বলেন, “সোনা আমদানির প্রক্রিয়া সহজ না হলে বাজারে প্রতিযোগিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা কঠিন।”
তিনি আরও জানান, সোনা আমদানির প্রক্রিয়া সহজ না হওয়া পর্যন্ত ‘ব্যাগেজ রুল’ পদ্ধতির আওতায় স্বল্পমাত্রায় সোনা আনার সুযোগ পুনর্বহাল করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সোনা ব্যবসা ও চোরাকারবারের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “চোরাকারবারি ও সোনা ব্যবসায়ী এক নয়। বৈধ ব্যবসায়ী কখনো অবৈধ কাজে জড়ায় না।”
বাজুসের নবনির্বাচিত এই কমিটি ২০২৫ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে।