আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির লাল কেল্লার কাছে সোমবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ গাড়িবোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ১১ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণটি স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে লাল কেল্লা এলাকার এক ব্যস্ত রাস্তায় ঘটে।
দিল্লি পুলিশের বরাত দিয়ে জানা গেছে, বিস্ফোরণটি অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল। বিস্ফোরণের পরপরই আহতদের স্থানীয় লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ (এলএনজেপি) হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকরা আটজনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন। বিস্ফোরণে আশপাশের তিন থেকে চারটি গাড়িতেও আগুন ধরে যায় এবং তা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দিল্লি ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, লাল কেল্লার মেট্রো স্টেশনের এক নম্বর গেটের কাছে গাড়িতে বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার পর দ্রুত দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করেন। এতে অন্তত ২০টি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশ পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেছে এবং যান চলাচল সীমিত করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের ভবনের জানালা কেঁপে উঠেছে এবং বিভিন্ন গাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আমার বাড়ির ছাদ থেকে আগুনের বিশাল গোলা দেখতে পেয়েছি। বিস্ফোরণের ভয়াবহ শব্দ শুনে স্থানীয়রা দৌড়ে বাইরে বের হয়েছে।” আরেক প্রত্যক্ষদর্শী উল্লেখ করেন, “আমি গুরদুয়ারায় ছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ শুনি। বিস্ফোরণের শব্দ এত ভয়াবহ ছিল যে, কী ঘটেছে তাৎক্ষণিকভাবে বুঝতে পারিনি।”
বিস্ফোরণের দিনই হরিয়ানা রাজ্যের ফরিদাবাদে একটি ভাড়া বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। ওই বাসাটি জম্মু ও কাশ্মিরের পুলওয়ামার বাসিন্দা ডা. মুজাম্মিল শাকিল ভাড়া নিয়েছিলেন। তিনি সম্প্রতি ভারতের একটি সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, গত কয়েক দিনে হরিয়ানা ও জম্মু-কাশ্মির পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ অভিযানে ওই নেটওয়ার্ক ধ্বংস করা হয়েছে। অভিযানে ২,৯০০ কিলোগ্রামেরও বেশি বোমা তৈরির বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। এই অভিযান প্রায় ১৫ দিন ধরে চলছিল।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, লাল কেল্লার বিস্ফোরণ রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করবে। পুলিশের প্রাথমিক ধারা অনুযায়ী, এটি একটি পরিকল্পিত হামলা বলে মনে করা হচ্ছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনার প্রেক্ষাপট যাচাই করতে তদন্ত শুরু করেছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা কড়া সতর্কতা জারি করেছে। লাল কেল্লা এবং আশেপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং মেট্রো, বাস ও অন্যান্য গণপরিবহনে সতর্কতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।