1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল: আপিল বিভাগের ঐতিহাসিক রায়

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫
  • ২২ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পূর্ববর্তী রায়কে অবৈধ ঘোষণা করে সংবিধানে ত্রয়োদশ সংশোধনী পুনর্বহাল করেছেন। এর ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনরায় সংবিধানে কার্যকর অবস্থায় ফিরে এলেও রায়ের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। তবে চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচন থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনরায় কার্যকর হবে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা ছিলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। রায় ঘোষণার সময় আদালতকক্ষ আইনজীবী, সংশ্লিষ্ট পক্ষ এবং দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে পূর্ণ ছিল।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ এই রায় নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্ক ও আইনি লড়াইয়ের নতুন অধ্যায় তৈরি করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে দেড় দশকের বেশি সময় ধরে চলমান আইনি ও রাজনৈতিক জটিলতা নতুন করে সংবিধানিক ব্যাখ্যার মাধ্যমে পুনর্বিন্যাস করা হলো।

২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করেন, যা ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে পাস হয়েছিল। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে কয়েকজন আইনজীবী রিট দায়ের করলে দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেন। সেই রায়ের পর ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় পঞ্চদশ সংশোধনী, যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যত বিলুপ্ত হয়।

সরকার পরিবর্তনের পর ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট এই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদনের সুযোগ পাওয়া যায়। পরে নাগরিক সমাজের পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিএনপির মহাসচিব ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেলসহ বিভিন্ন ব্যক্তি পৃথকভাবে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে আপিলের অনুমতি দেওয়ার পর চলতি বছর ২১ অক্টোবর থেকে টানা কয়েকদফা শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

রিট ও সংশ্লিষ্ট আপিলের শুনানিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা সংবিধানিক ব্যাখ্যা, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ প্রশাসন, রাজনৈতিক আস্থাহীনতা ও রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল উপস্থিত হয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।

টানা ১০ দিনের শুনানির পর আদালত বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন এবং পরে নির্ধারিত দিনে পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে আদালত বলেন, সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা একটি কার্যকর কাঠামো হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে পরিবর্তন আনা হলে নির্বাচন প্রস্তুতির চলমান প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হতে পারে। এ কারণে আগামী জাতীয় নির্বাচন পূর্বনির্ধারিত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে।

ঐতিহাসিক এই রায় দেশের নির্বাচনব্যবস্থা, রাজনৈতিক ক্ষেত্র এবং সাংবিধানিক কাঠামোর ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন আলোচনা ও মূল্যায়নের পথ উন্মুক্ত করেছে। বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী, রায়ের ফলে ভবিষ্যৎ নির্বাচনগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা বৃদ্ধি, নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি হবে।

তবে রায় বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সংশ্লিষ্ট সাংবিধানিক বিধান কার্যকর করা এবং প্রশাসনিক কাঠামো প্রস্তুত করার বিষয়ে আগামীর রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নতুন সমন্বয় প্রয়োজন হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলে ধারণা করা হচ্ছে। রায়ের ফলে সংবিধানে পুনর্বহাল হওয়া ত্রয়োদশ সংশোধনী পুনরায় কার্যকর হওয়ার আগে প্রশাসনিক, আইনি ও নীতিগত দিকগুলো বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

এই রায় বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থার দীর্ঘদিনের বিতর্কিত অধ্যায়ের সমাধানের পথে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। ভবিষ্যতের নির্বাচনগুলোতে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি জনআস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় রায়ের তাৎপর্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com