জেলা প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের পিচুরিয়ায় গতকাল বুধবার (১৯ নভেম্বর) মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। তিনি সভায় মওলানা ভাসানীর জীবন ও রাজনৈতিক অবদান তুলে ধরেন এবং তার দেশের মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য আত্মনিবেদিত কর্মকাণ্ডের দিকে গুরুত্বারোপ করেন।
টুকু তার বক্তব্যে বলেন, “মওলানা ভাসানী মজলুমদের নেতা ছিলেন। কৃষক আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশে যখনই কোথাও জুলুম-নির্যাতন হয়েছে, তিনি সেখানেই রুখে দাঁড়িয়েছেন। কাগমারী সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি স্বাধীনতার বীজ বপন করেছিলেন এবং সেই ধারাবাহিকতায় জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, ভাসানী জিয়াউর রহমানকে দেশপ্রেমিক ও সৎ মানুষ হিসেবে বিবেচনা করতেন এবং দল গঠনের সময় তার প্রতি দোয়া ও সমর্থন জানিয়েছিলেন।
সভায় টুকু মওলানা ভাসানীর জীবন দর্শনের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, “মানুষের অধিকার ও জনগণের পাশে থাকার যে দর্শন ভাসানী রেখে গেছেন, সেটিই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও অনুসরণ করেন—‘জনগণকে সঙ্গে রাখুন, জনগণের পাশে থাকুন’। এটি বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃত্বের জন্য একটি দৃষ্টান্ত।”
অলোচনা সভায় জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার রাশেদুল হাসান, সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দিন বিপ্লবসহ অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রাখেন। তারা মওলানা ভাসানীর সংগ্রামী জীবন, রাজনৈতিক ত্যাগ ও দেশের মানুষের কল্যাণে তার অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এছাড়া অনুষ্ঠানের পরিপ্রেক্ষিতে টুকু টাঙ্গাইলের স্থানীয় একটি প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুঁড়ি’-এর চ্যাম্পিয়ন প্রেয়সী চক্রবর্তীকেও শুভেচ্ছা জানান। এই অনুষ্ঠান স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে মওলানা ভাসানীর স্মৃতিকে প্রাধান্য দেয়ার পাশাপাশি বর্তমান রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে তার দর্শনকে সংযুক্ত করার একটি সুযোগ হিসেবে কাজ করেছে।
মওলানা ভাসানী বাংলাদেশের ইতিহাসে কৃষক ও সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার রাজনৈতিক ও সামাজিক অবদান স্বাধীনতা আন্দোলন ও পরবর্তী দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে এখনও প্রাসঙ্গিক। বিশেষত কাগমারী সম্মেলন থেকে স্বাধীনতার সূত্রপাত এবং দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বে তার প্রভাব আজও আলোচিত বিষয়। এই আলোচনা সভা স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে ভাসানীর দর্শনকে এগিয়ে নেওয়ার এক প্রচেষ্টা হিসেবেও দেখা হয়েছে।
সভা শেষ পর্যন্ত মওলানা ভাসানীর জীবন ও রাজনৈতিক ত্যাগ, তার দর্শনের প্রাসঙ্গিকতা এবং বর্তমান প্রজন্মের জন্য শিক্ষণীয় দিকগুলো তুলে ধরার মাধ্যমে শেষ হয়।