জেলা প্রতিনিধি
ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৫৪ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বালিয়াগট্টি বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। সংঘর্ষের সময় বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ও দোকানপাটও ভাঙচুর করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে নুরু মাতুব্বর ও জাহিদ মাতুব্বরের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলছিল। শনিবার সকাল ৮টার দিকে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র, ঢাল, সরকি, ইট-পাটকেলসহ বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পাশের কয়েকটি গ্রামের লোকজনও সংঘর্ষে অংশগ্রহণ করেন।
উভয় পক্ষের নেতা নুরু মাতুব্বর ও জাহিদ মাতুব্বর আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর তারা বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হন। সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের অন্তত ৫৪ জন আহত হন। আহতদের ফরিদপুরসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে আহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
সংঘর্ষের কারণে বাজার এলাকার কিছু বাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। সালথা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মারুফ হাসান জানান, পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বিষয়টি নিয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, এলাকায় শান্তি ফিরে আসা পর্যন্ত বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে পুলিশ ও সেনার উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। এ ঘটনায় সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং স্থানীয় আধিপত্যের দ্বন্দ্বের কারণে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক সরকারের রাজনীতিতে পরিবর্তনের পর এই ধরনের সংঘর্ষের প্রভাব স্থানীয় প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনী পর্যবেক্ষণ করছেন।
সংঘর্ষ স্থানে তৎক্ষণাৎ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনা মোতায়েন করা হলেও, সংঘর্ষের ধরণ এবং উভয় পক্ষের সক্রিয় অংশগ্রহণ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, সম্পূর্ণ শান্তি ফিরতে কিছু সময় লাগতে পারে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আক্রান্তদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং পুনরায় সংঘর্ষ প্রতিরোধের জন্য এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এ ধরনের সংঘর্ষ স্থানীয় জনজীবন এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে প্রভাব ফেলতে পারে। বাজার বন্ধ এবং ভাঙচুরের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিপূরণের দাবি তুলতে পারেন। এছাড়া, এলাকায় সামাজিক উত্তেজনা ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবও সৃষ্টি হতে পারে। প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে এবং স্থানীয় শান্তি ফেরাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।