জেলা প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের ধনী গাগলা এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত এবং অন্তত দশজন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি রোববার (৩০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৬ শতক জমি নিয়ে বিরোধের জেরে স্থানীয় আলতাফ হোসেন ও এরশাদ আলীর অনুসারীদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে একে অপরের ওপর হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান এরশাদ আলী (৪২) ও কুলছুম বেগম (৫৫)। আরও একজন, কাওছার মিয়া, হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
আহত অন্তত দশজনকে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে নূর মোহাম্মদ ও তার বড় ভাইয়ের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। তারা বর্তমানে হাসপাতালের বিশেষ পরিচর্যা নিচ্ছেন।
নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। সংঘর্ষের ফলে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং জনসাধারণকে সাবধান থাকার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে একই জমি নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ চলছিল। এর আগে কয়েকবার স্থানীয় স্বাভাবিক সমাধানের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন উভয়পক্ষকে নিন্দনীয় আচরণ পরিহার এবং আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানাচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানানো হয়, নিহত ও আহতদের পরিবারকে সরকারি সহযোগিতা এবং ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তদারকি করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এলাকায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং আরও জটিল ঘটনা রোধে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এই ধরনের জমি সংক্রান্ত বিরোধ কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে সীমিত জমি এবং পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্কতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয় সমাজেও ব্যাপক শোক ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে, এবং উভয়পক্ষকে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নিতে স্থানীয়রা অনুরোধ করছেন।
অভিযোগ ও তদন্তের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, সংঘর্ষের সময় উভয়পক্ষের লোকজন হাতিয়ার ব্যবহার করায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।