জাতীয় ডেস্ক
ঢাকা, সোমবার, ১ ডিসেম্বর: বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেশি ও বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে অব্যাহত রয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার গুলশানের চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক যোগদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের জানান, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যসেবা পরিচালনা করা হচ্ছে একটি বিশেষ মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে, যাতে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকরা যুক্ত রয়েছেন।
তিনি বলেন, “ম্যাডাম অসুস্থ, তবে চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। দেশি-বিদেশি সব চিকিৎসককে যুক্ত রেখেই তারা চিকিৎসা পরিচালনা করছেন। আমাদের আশা ও প্রত্যাশা, তিনি শীঘ্রই সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরবেন।”
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ১৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় চিকিৎসা দল অবিলম্বে তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করে। এর পর থেকে তিনি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি রয়েছেন এবং নিবিড় চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি ও বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা পরিচালনা করছে। বোর্ডে বাংলাদেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরাও রয়েছেন। বোর্ডটি নিয়মিত তার স্বাস্থ্যের অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োজনে চিকিৎসা পরিকল্পনা সংশোধন করছে।
বনানীর মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তার নেতৃত্বে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসক দলের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে খালেদা জিয়ার সেবার মান নিশ্চিত করছেন। চিকিৎসকরা তার অবস্থার উন্নতি এবং সুস্থতার জন্য পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা অব্যাহত রেখেছেন।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, সংক্রমণজনিত ফুসফুসের সমস্যা সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণযোগ্য, তবে রোগীর বয়স এবং পূর্ববর্তী স্বাস্থ্য পরিস্থিতি চিকিৎসার জটিলতা বাড়াতে পারে। তাই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত চিকিৎসা প্রোটোকল অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দেশি-বিদেশি চিকিৎসক সমন্বয়ে গঠিত বোর্ডের মাধ্যমে রোগীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য দুটিরই প্রতি লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। চিকিৎসা দলের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, ফুসফুসের সংক্রমণ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা গেলে রোগীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি সম্ভব।
চিকিৎসকরা বর্তমানে তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতির নিয়মিত আপডেট যাচাই করছেন এবং প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মান অনুসারে চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন। বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চিকিৎসা কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও বিশেষজ্ঞ পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে যেকোনো জটিলতার ক্ষেত্রে তা দ্রুত সমাধান করা যায়।
বিগত কয়েক সপ্তাহে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রমে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয় ও পরিবারের সক্রিয় অংশগ্রহণ চিকিৎসা প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়ক হয়েছে। রোগীর স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য চিকিৎসকরা পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ওষুধ ও সাপোর্টিভ কেয়ারের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন।
চিকিৎসা বোর্ডের নজরদারি এবং পরিবারের সমন্বয় কার্যক্রমের কারণে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি যথাসম্ভব দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।