1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

ভূমিকম্প শনাক্তকরণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির অগ্রগতি ও কার্যকারিতা

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ১০ বার দেখা হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক

ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল, মাত্রা ও তীব্রতা নির্ধারণে বিজ্ঞানীরা যে আধুনিক সিসমোলজিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করেন, তা পৃথিবীর অভ্যন্তরে সংঘটিত ভূ-প্রক্রিয়া বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পৃথিবীপৃষ্ঠের গভীরে অবস্থিত চ্যুতি বা ফল্টলাইনের আকার ও সেখানে সংঘটিত স্লিপের মাত্রা অনুযায়ী ভূমিকম্পের শক্তি নির্ধারিত হয়। এসব চ্যুতি বহু কিলোমিটার গভীরে থাকায় সরাসরি পরিমাপ করা সম্ভব নয়; ফলে সিসমোগ্রাফে রেকর্ড হওয়া সিসমোগ্রামই ভূমিকম্প বিশ্লেষণের প্রধান উপাত্ত হিসেবে কাজ করে।

ভূমিকম্পের মাত্রা বা ম্যাগনিচিউড নির্ধারণে সিসমোগ্রামে দৃশ্যমান কম্পনের রেখাই মূল সূচক। কম কম্পনযুক্ত ছোট একটি নড়বড়ে রেখা তুলনামূলক দুর্বল ভূমিকম্পের ইঙ্গিত দেয়, আর দীর্ঘ ও তীব্র কম্পন বৃহৎ মাত্রার ভূমিকম্প নির্দেশ করে। কম্পনের দৈর্ঘ্য নির্ভর করে ফল্টলাইনের আকারের ওপর এবং কম্পনের তীব্রতা নির্ভর করে স্লিপ বা পিছলে যাওয়ার পরিমাণের ওপর। প্রতিটি ভূমিকম্পের জন্য একটি নির্দিষ্ট ম্যাগনিচিউড থাকে, তবে তীব্রতা বা ইন্টেনসিটি ভিন্ন স্থানে ভিন্নভাবে অনুভূত হয়, কারণ এটি নির্ভর করে কোনো ব্যক্তি বা স্থাপনা ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র থেকে কত দূরে অবস্থান করছে ও মাটির স্থানীয় প্রকৃতির ওপর।

ভূমিকম্প শনাক্তকরণে পি তরঙ্গ (Primary wave) ও এস তরঙ্গ (Secondary wave) বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। পি তরঙ্গ দ্রুতগামী; তাই সিসমোগ্রাফে প্রথম এ তরঙ্গই পৌঁছায়। এস তরঙ্গ পি তরঙ্গের চেয়ে ধীর হওয়ায় পরে আসে, কিন্তু এটি অধিক শক্তিশালী কম্পন সৃষ্টি করে। পি ও এস তরঙ্গের মধ্যকার সময় ব্যবধান ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা নির্ধারণ করেন সিসমোগ্রাফের অবস্থান থেকে ভূমিকম্প কত দূরে ঘটেছে। এই তুলনাটিকে বজ্রপাত ও বজ্রধ্বনির সঙ্গে মিলিয়ে বোঝানো যায়—বজ্রপাতের আলো আগে দেখা যায়, তারপর শব্দ শোনা যায়; একইভাবে পি তরঙ্গ আগে এবং এস তরঙ্গ পরে সিসমোগ্রাফে ধরা পড়ে।

সিসমোগ্রাফ এককভাবে ভূমিকম্পের দিক নির্দেশ করতে পারে না; এটি কেবল দূরত্ব জানায়। ভূমিকম্পের সঠিক অবস্থান নির্ধারণে বিজ্ঞানীরা ‘ট্রায়াঙ্গুলেশন’ পদ্ধতি ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে তিনটি ভিন্ন সিসমোগ্রাফ স্টেশনের রেকর্ড ব্যবহার করে মানচিত্রে তিনটি বৃত্ত আঁকা হয়, যার প্রতিটির ব্যাসার্ধ ওই স্টেশন থেকে ভূমিকম্প পর্যন্ত দূরত্বের সমান। তিনটি বৃত্ত যেখানে ছেদ করে, সেই বিন্দুই ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র বলে নির্ধারিত হয়। এই পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী ভূকম্পীয় গবেষণায় সবচেয়ে বিশ্বস্তভাবে ব্যবহৃত।

এ ধরনের বিশ্লেষণে বৈজ্ঞানিকদের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো ভূমিকম্পের তথ্য দ্রুত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা, কারণ শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর আফটারশক বা পরাঘাত আরও ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাৎক্ষণিকভাবে উপকেন্দ্র চিহ্নিত করা গেলে উদ্ধার কার্যক্রম দ্রুত সংগঠিত করা এবং সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে সতর্কতা জারি করা সহজ হয়। আন্তর্জাতিক ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলো বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হাজারো সিসমোগ্রাফের তথ্য সমন্বয় করে বাস্তবসম্মত সময়েই প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে সক্ষম হচ্ছে, যা দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করছে।

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ভূমিকম্প পূর্বাভাস এখনো নিশ্চিতভাবে দেওয়া সম্ভব না হলেও ফল্টলাইনের আচরণ, ভূ-পৃষ্ঠের বিকৃতি এবং সিসমিক ফাঁকা অঞ্চল নিয়ে গবেষণা ভবিষ্যতে সম্ভাব্য ঝুঁকি কমাতে বড় ভূমিকা রাখবে। ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলে স্থাপনা নির্মাণে ভূ-প্রকৌশলগত নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণের গুরুত্বও ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূকম্পন বিশ্লেষণে উন্নত প্রযুক্তি যত দ্রুত বিকশিত হবে, দুর্যোগ প্রস্তুতি ও ঝুঁকি হ্রাস–সংক্রান্ত নীতি ততই কার্যকর হবে।

ভূমিকম্প সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক তথ্য উপস্থাপন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ভূমিকম্পের সময়ে পি ও এস তরঙ্গের আগমনবদ্ধতা বুঝতে পারলে কম্পনের তীব্রতা ও উৎস সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়, যা ব্যক্তি পর্যায়ে দ্রুত প্রতিক্রিয়া ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করতে পারে। বিশ্বব্যাপী গবেষণা সংস্থাগুলো ভূমিকম্প বিশ্লেষণের নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন ও তথ্যের নির্ভুলতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতের ভূমিকম্প–সংক্রান্ত গবেষণাকে আরও শক্তিশালী করবে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com