1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

আগারগাঁওয়ে গ্যাস বিস্ফোরণে একই পরিবারের ছয়জন দগ্ধ

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৪ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের একটি আবাসিক ভবনে গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় একই পরিবারের ছয়জন দগ্ধ হয়েছেন। শনিবার ভোরে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনার পর দগ্ধ ব্যক্তিদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে, যেখানে বর্তমানে তাদের চিকিৎসা চলছে। ঘটনাটি গৃহস্থালি গ্যাস ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা ঘাটতি ও তদারকির প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি নতুন করে সামনে এনেছে।

পরিবারের সদস্য ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন মো. জলিল মিয়া (৫০), তার স্ত্রী আনেজা বেগম (৪০), ছেলে আসিফ মিয়া (১৯) ও সাকিব মিয়া (১৬), মেয়ে মনিরা (১৭) এবং নাতনি শিশু ইভা (৬)। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বিস্ফোরণ ঘটার পর তাদের দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

জলিল মিয়ার মেয়ের জামাই আফরান মিয়া জানান, আগারগাঁও পাকা মার্কেটের পাশে একটি আবাসিকে পরিবারটি বসবাস করত। তার বর্ণনা অনুযায়ী, বাসায় থাকা অবস্থায় ভোরের দিকে হঠাৎ করে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। তিনি জানান, বিস্ফোরণের পর পরিবারের সকল সদস্য আগুনে দগ্ধ হন এবং দ্রুত তাদের উদ্ধার করে সকাল পৌনে ৮টার দিকে বার্ন ইউনিটে নিয়ে আসা হয়।

দগ্ধদের হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসকরা জানান, সবারই শরীরের বিভিন্ন অংশে পোড়া ক্ষত রয়েছে। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, সকালে আগারগাঁও এলাকা থেকে নারী ও শিশুসহ ছয়জনকে দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ড্রেসিং কার্যক্রম চলছে, তবে দগ্ধতার মাত্রা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে এবং ঘটনাস্থল তদন্তের জন্য কর্মকর্তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আশপাশের বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ভবনের ভেতরে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে এবং আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আগুন ঘর থেকে বাইরে ছড়াতে পারেনি। স্থানীয়দের সহায়তায় আহত ব্যক্তিদের প্রাথমিকভাবে নিচে নামিয়ে আনার পর অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে গ্যাস লাইনের লিকেজকে দায়ী করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর দাবি, ভবনটির গ্যাস সংযোগ অনেক পুরোনো এবং বেশ কিছুদিন ধরেই লিকেজের সমস্যা দেখা যাচ্ছিল। তবে ঘটনার আগে বাসার ভেতরে কোনো গ্যাসের গন্ধ টের পাওয়া গিয়েছিল কি না—এ বিষয়ে দগ্ধ ব্যক্তিদের অবস্থার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পুরোনো গ্যাস লাইন, অনিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবহারকারীদের অসচেতনতার কারণে এ ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে গ্যাসের লিকেজ দীর্ঘদিন ধরে অজ্ঞাত থাকে এবং কোনো প্রজ্জ্বলন উৎসের সংস্পর্শে এলে বিস্ফোরণ ঘটে। তারা জানান, নিয়মিত সময় অন্তর গ্যাস সংযোগের নিরাপত্তা পরীক্ষা ও সচেতন ব্যবহারের মাধ্যমে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

অগ্নি-নিরাপত্তা সম্পর্কিত সংস্থাগুলোর তথ্য অনুসারে, শীতের সময় গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ার কারণে লিকেজের প্রবণতা বাড়ে এবং ব্যবহারকারীরা গ্যাসের গন্ধ টের পেলেও অনেক সময় গুরুত্ব না দিয়ে স্বাভাবিকভাবে চুলা জ্বালানোর চেষ্টা করেন। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। আগারগাঁওয়ের ঘটনাটিও একই ধরনের ঝুঁকির ফল হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাসার ভেতরে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা যাচাই করছে। তদন্তের মাধ্যমে লিকেজের উৎস, বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল কি না—এসব বিষয় যাচাই করা হবে বলে জানা গেছে। ভবনের অন্যান্য বাসিন্দাদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গ্যাস লাইন পরীক্ষা করা হচ্ছে।

ঘটনাটি শহুরে আবাসনে গ্যাস নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুরোনো ভবনগুলোতে গ্যাস লাইনের আধুনিকায়ন, লিকেজ শনাক্তকরণ ব্যবস্থা স্থাপন এবং বাসিন্দাদের প্রশিক্ষিত করার উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নিয়মিত মনিটরিং জোরদার করলে এ ধরনের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

দগ্ধ ব্যক্তিদের চিকিৎসা চলছে এবং তাদের অবস্থার উন্নতি হওয়ার পর বিস্ফোরণের আগে-পরের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যেতে পারে। তদন্ত সম্পন্ন হলে দুর্ঘটনার সুনির্দিষ্ট কারণ ও দায় নির্ধারণে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com