বিনোদন ডেস্ক
ঢালিউডের সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত অভিনেত্রী মন্দিরা চক্রবর্তী নতুন কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করার পর তা নিয়ে দর্শক ও ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। শনিবার রাতে নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এসব ছবিকে ঘিরে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে শুরু হয় নানা মন্তব্য ও আলোচনা।
মন্দিরা চক্রবর্তী চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু করেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম পরিচালিত ‘কাজলরেখা’ সিনেমার মাধ্যমে। সেই অভিষেকের পর আরিফিন শুভর সঙ্গে অভিনীত তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘নীলচক্র’ তাকে দর্শকদের কাছে আরও পরিচিত করে তোলে। অভিনয়ের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় উপস্থিতি এবং সেখানে নিয়মিত বিভিন্ন লুক ও ব্যক্তিগত মুহূর্ত শেয়ার করা— সব মিলিয়ে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তিনি দ্রুতই দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সাম্প্রতিক পোস্টটিতে অভিনেত্রীকে একটি গাউন পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়। পোশাক, পরিবেশ ও পোর্ট্রেটধর্মী এই ফটোশুটকে কেন্দ্র করে ভক্তরা মন্তব্যের ঘরে তার স্টাইল ও উপস্থাপনাকে ইতিবাচকভাবে উল্লেখ করেন। মন্দিরা ছবিগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত ক্যাপশনে সংক্ষিপ্ত একটি বাক্য লেখেন, যা নিয়েও সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা দেখা যায়। তবে এসব প্রতিক্রিয়া মূলত তার ভক্তদের ব্যক্তিগত অভিমত; স্বাভাবিকভাবেই কোনো শিল্পীর নতুন প্রকাশনা এ ধরনের মনোযোগ আকর্ষণ করে থাকে।
মন্দিরা চক্রবর্তীর শিল্পীজীবনের শুরুটা ছিল নাচকে কেন্দ্র করে। শিশু বয়স থেকেই তিনি কত্থক নৃত্যে প্রশিক্ষণ নেন এবং দীর্ঘদিন এই ধারায় অনুশীলন চালিয়ে যান। নৃত্যশিল্পী হিসেবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও উৎসবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি জাতীয় পর্যায়ে পরিচিতি পান। কত্থক নাচে দক্ষতার স্বীকৃতি হিসেবে তিনি তিনবার জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন।
২০১২ সালে ‘সেরা নাচিয়ে’ নামে একটি জাতীয় নৃত্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি রানার্স আপ হন। এই সাফল্য তার নাচের ক্যারিয়ারকে নতুনভাবে দৃশ্যমান করে তোলে এবং বিভিন্ন স্টেজ শো, সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাচনির্ভর প্রকল্পে তার অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে। পরে তিনি অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী হয়ে নাটক ও বিজ্ঞাপনে কাজ শুরু করেন। এ সময় তিনি টেলিভিশন নাটকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে অভিনয়জগতে সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেন।
অভিনয় জীবনের এই অভিজ্ঞতা তাকে চলচ্চিত্রের দিকে এগিয়ে নেয়। প্রথম চলচ্চিত্র ‘কাজলরেখা’ ছিল ঐতিহ্যভিত্তিক গল্প অবলম্বনে নির্মিত একটি কাজ, যেখানে নতুন মুখ হিসেবে তার উপস্থিতিকে নির্মাতা ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করেন। দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘নীলচক্র’-এ তিনি আরিফিন শুভর বিপরীতে অভিনয় করেন, যা মুক্তির পর সমালোচনা ও দর্শক প্রতিক্রিয়ায় তাকে আরও আলোচনায় আনে। চলচ্চিত্রদ্বয় মুক্তির পর তাকে বিভিন্ন নতুন প্রকল্পে কাজের প্রস্তাব দেওয়া হলেও সর্বশেষ কোন কাজে তিনি অংশ নিচ্ছেন— এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সক্রিয়তা ভক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের একটি বড় মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। বিভিন্ন ফটোশুট, কাজের আপডেট, ব্যক্তিগত অর্জন কিংবা শিল্পচর্চা— এসব বিষয় নিয়মিত শেয়ার করার ফলে তার অনুসারীর সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। মন্দিরার প্রকাশিত কোনো ছবি বা বার্তা প্রায়ই আলোচনার জন্ম দেয়; এতে যেমন ভক্তরা তার কাজ সম্পর্কে অবগত হন, তেমনি শিল্পী হিসেবেও তিনি দর্শকের কাছে আরও পরিচিত হয়ে ওঠেন।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনে তরুণ প্রজন্মের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের উত্থান উল্লেখযোগ্য। মন্দিরা চক্রবর্তীও সেই ধারার একজন, যিনি নাচ থেকে অভিনয়— দু’ধারাতেই সমানভাবে দক্ষতা দেখিয়েছেন। তার অভিনীত দুটি চলচ্চিত্র তাকে শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠার ভিত্তি তৈরি করেছে বলে মনে করা হয়। নাচে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তার অভিনয়ধর্মী চলাফেরা ও উপস্থাপনে স্বাভাবিক ছন্দ এনে দেয়— যা ভবিষ্যতে সিনেমায় চরিত্রায়নের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
বর্তমানে তিনি নতুন কোনো সিনেমায় কাজ করছেন কি না তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানা না গেলেও, শিল্পীজীবনের অভিজ্ঞতা ও সাম্প্রতিক জনপ্রিয়তা বিবেচনায় তাকে নিয়ে নির্মাতাদের আগ্রহ বজায় রয়েছে বলে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের অভিমত পাওয়া যায়। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা নতুন ছবি ও ভক্তদের প্রতিক্রিয়াও ইঙ্গিত দেয়— তিনি এখনো জনমনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন এবং অভিনয়জগতে তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে দর্শকদের মধ্যে কৌতূহল অব্যাহত রয়েছে।