1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
বিএনপির সমাপনী কর্মসূচিতে তারেক রহমানের বক্তব্যে দুর্নীতি দমন ও গণতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর খাদ্যে রাসায়নিক দূষণ রোধে সমন্বিত উদ্যোগের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার স্মৃতি মান্ধানা ও পলাশ মুচ্ছলের বিয়ে ভাঙার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি ৫৬১ টাইফয়েড টিকা অভিযানে দেশে ৪ কোটি ২৫ লাখের বেশি শিশুর সুরক্ষা নির্বাচনের আগের রাতে সব কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত মানবসম্পদ উন্নয়নে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির আহ্বান পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগে আসছে অগ্রগতি এসএমই পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজার অনুসন্ধানের ওপর গুরুত্ব মোস্তাফিজের সফল অভিষেকেও দুবাই ক্যাপিটালসের পরাজয়

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ও পঞ্চদশ সংশোধনী বিষয়ে হাইকোর্টের রায়–বিরোধী আপিলের শুনানি শুরু

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ২ বার দেখা হয়েছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কয়েকটি বিধান অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিলের শুনানি সর্বোচ্চ আদালতে শুরু হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে এ শুনানি চলছে। আপিলকারীদের পক্ষে আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের অনুমতি গত ১৩ নভেম্বর দেন আপিল বিভাগ। সেই আদেশের পর নির্ধারিত সময়ে আপিলটি তালিকাভুক্ত হলে রোববার থেকে শুনানি কার্যক্রম শুরু হয়। এতে রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক উপস্থিত আছেন।

গত ৩ নভেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ পঞ্চদশ সংশোধনীর কয়েকটি অংশকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করা হয়। রিটকারী সংস্থা সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া এ আবেদন দাখিল করেন। আপিলে পঞ্চদশ সংশোধনী সম্পূর্ণ বাতিলের আবেদন জানানো হয়।

হাইকোর্ট গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রায়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর ২০ ও ২১ অনুচ্ছেদকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে। রায়ে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এবং এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশে পরিণত হয়েছে। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর দ্বৈত বেঞ্চ প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী রায় ঘোষণা করেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত উল্লেখ করেন, গণতন্ত্র সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর একটি অপরিহার্য অংশ, যা কার্যকর হয় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে। আদালত মনে করেন, দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রত্যক্ষ প্রতিফলন দেখা যায়নি। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে জনগণের আস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছিল, যা সাম্প্রতিক জনঅসন্তোষের পটভূমি তৈরি করেছে।

রায়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংযোজিত ৭ক, ৭খ ও ৪৪(২) অনুচ্ছেদও বাতিল ঘোষণা করা হয়। ৭ক অনুচ্ছেদে সংবিধান বাতিল বা স্থগিতকরণকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ ছিল এবং ৭খ অনুচ্ছেদে সংবিধানের মৌলিক বিধানসমূহ সংশোধন অযোগ্য করার কথা বলা হয়েছিল। ৪৪(২) ধারায় মৌলিক অধিকার বলবৎকরণে হাইকোর্টের এখতিয়ারের বাইরে অন্য আদালতকে আইন দ্বারা ক্ষমতা প্রদান করার বিধান ছিল। আদালত এসব বিধানকে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হিসেবে অভিহিত করেন।

গণভোট–সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনীর ৪৭ ধারা বাতিল করেও হাইকোর্ট রায় দেয়। এর ফলে সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে গণভোটের বিধান, যা ১২তম সংশোধনীতে ছিল, তা পুনর্বহাল হয়। আদালতের মতে, গণভোটের বিধান বিলুপ্তি গণতান্ত্রিক কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে মোট ৫৪টি ক্ষেত্রে সংবিধানে সংযোজন, পরিমার্জন ও প্রতিস্থাপন আনা হয়েছিল। হাইকোর্ট রায়ে সংশোধনীটি সম্পূর্ণ বাতিল করেনি; বরং সংশ্লিষ্ট বিধানগুলোর বিষয়ে জনগণের মতামত বিবেচনায় রেখে ভবিষ্যতে আইন প্রণেতারা প্রয়োজনীয় সংশোধন আনতে পারবেন বলে উল্লেখ করেন।

রুল জারির প্রেক্ষাপটে দীর্ঘকালব্যাপী শুনানি শেষে হাইকোর্ট রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেছিল গত বছরের ৫ ডিসেম্বর। এর আগে ২০২৩ সালের ১৯ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না—এ প্রশ্নে রুল জারি করা হয়। রুলে পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি পক্ষভুক্ত হন।

২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। এর মাধ্যমে জাতির জনকের স্বীকৃতিসহ বেশকিছু বিধান সংযোজন, নারীদের সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা বৃদ্ধি, এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ সাংবিধানিক পরিবর্তন আনা হয়েছিল।

বর্তমান শুনানির মাধ্যমে হাইকোর্টের রায়ের সাংবিধানিক ভিত্তি, পঞ্চদশ সংশোধনীর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এবং ভবিষ্যৎ নির্বাচনব্যবস্থার ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব নতুন করে বিচারাধীন হলো। আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে দেশে নির্বাচনী কাঠামো ও সাংবিধানিক সংশোধনের ধরন–ধারণার ওপর গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com