1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
বিএনপির সমাপনী কর্মসূচিতে তারেক রহমানের বক্তব্যে দুর্নীতি দমন ও গণতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর খাদ্যে রাসায়নিক দূষণ রোধে সমন্বিত উদ্যোগের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার স্মৃতি মান্ধানা ও পলাশ মুচ্ছলের বিয়ে ভাঙার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি ৫৬১ টাইফয়েড টিকা অভিযানে দেশে ৪ কোটি ২৫ লাখের বেশি শিশুর সুরক্ষা নির্বাচনের আগের রাতে সব কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত মানবসম্পদ উন্নয়নে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির আহ্বান পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগে আসছে অগ্রগতি এসএমই পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজার অনুসন্ধানের ওপর গুরুত্ব মোস্তাফিজের সফল অভিষেকেও দুবাই ক্যাপিটালসের পরাজয়

ভারত–রাশিয়া ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগত অস্থিরতার কারণে: পেন্টাগনের সাবেক কর্মকর্তা

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৩ বার দেখা হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের এক সাবেক কর্মকর্তা বলেছেন, বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের নীতিগত অস্থিরতার ফলে ভারত ও রাশিয়া পরস্পরের আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এবং এর প্রভাব দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত ভারসাম্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মার্কিন সিদ্ধান্তগুলোর ধারাবাহিকতা ও পরিপক্বতার ঘাটতি দুই দেশের সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে এবং সেই সুযোগই কাজে লাগাচ্ছে মস্কো।

সাবেক এই কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নীতিগত অবস্থানের কারণে নয়াদিল্লি তার কৌশলগত স্বার্থ রক্ষায় রাশিয়ার ওপর আরও নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। তার দাবি, মস্কোর সঙ্গে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে নতুন সমঝোতা ভারতকে দীর্ঘমেয়াদে স্বস্তি দেবে, বিশেষ করে যখন দেশটি দ্রুতগতির শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে এগোচ্ছে।

তিনি বলেন, ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির সম্পর্ক অতীতে ধারাবাহিকভাবে উন্নতির দিকে ছিল। তবে সাম্প্রতিক পদক্ষেপ, বিশেষ করে বাণিজ্য ও শুল্ক নীতির পরিবর্তন, দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে অস্বচ্ছতা তৈরি করেছে। তার মতে, এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অপ্রত্যাশিত এবং এর ফলে কৌশলগত সুবিধা হারানোর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

সাবেক কর্মকর্তা আরও অভিযোগ করেন, দক্ষিণ এশিয়ায় ভূরাজনৈতিক অবস্থান পুনর্নির্ধারণে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সিদ্ধান্ত ভারসাম্যহীনতা তৈরি করছে। তার দাবি, আঞ্চলিক রাজনীতি ও নিরাপত্তাব্যবস্থার বিষয়গুলো পর্যাপ্তভাবে বিবেচনা না করায় ওয়াশিংটনের নেওয়া কিছু পদক্ষেপে প্রশ্ন উঠছে। যদিও তিনি এসব দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি, তবুও যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এই ধরনের সমালোচনাকে তিনি একটি সতর্কবার্তা হিসেবে ব্যাখ্যা করেন।

তিনি বলেন, রুশ তেল ক্রয় নিয়ে ভারতকে কঠোর সমালোচনা করা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণের উদাহরণ। কারণ বৈশ্বিক সরবরাহ–ব্যবস্থায় মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করা অনেক দেশের পক্ষেই বাস্তবসম্মত নয়। তার মতে, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত নিজস্ব স্বার্থ বিবেচনায় যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তা বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে ভারতের জ্বালানির চাহিদা দ্রুত বাড়ছে এবং এই প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা দেশটির অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা ভারতকে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতা দিতে পারে। তার মন্তব্য, যুক্তরাষ্ট্র যদি ভারতকে কোনো নির্দিষ্ট পথে পরিচালিত করতে চায়, তবে বিকল্প জ্বালানি সরবরাহে সক্ষমতা প্রদর্শন করাই হবে সবচেয়ে কার্যকর পন্থা।

ভারতকে উপদেশ দেওয়ার পরিবর্তে বাস্তব সহায়তা দেওয়া জরুরি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক দামে জ্বালানি সরবরাহ না করতে পারলে অন্য দেশের প্রতি সমালোচনামূলক অবস্থান নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি হতে পারে না। তিনি মনে করেন, বৈশ্বিক কৌশলগত পরিস্থিতিতে ভারতকে নিজের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতেই হবে এবং এ ক্ষেত্রেও দেশটি সেই নীতি অনুসরণ করছে।

সম্প্রতি রাশিয়া ও ভারতের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জ্বালানি, প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য সহযোগিতা সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। বৈঠকে রাশিয়া ভারতকে তেল, গ্যাস এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি সামগ্রী সরবরাহ অব্যাহত রাখার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করে। দ্রুতবর্ধনশীল ভারতীয় অর্থনীতির জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করতে মস্কোর এই প্রতিশ্রুতিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতের ওপর আরোপিত শুল্ক নীতির বিষয়েও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা মন্তব্য করেন। তার মতে, বাণিজ্যিক বিরোধের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয় না। বরং এতে দ্বিপক্ষীয় আস্থার সংকট তৈরি হয়, যা কৌশলগত অংশীদারিত্বেও প্রভাব ফেলে। সাম্প্রতিক শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক পরিবেশে যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তা দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার ক্ষেত্রেও অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির সাম্প্রতিক ভারত সফরকে দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হওয়ার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। বৈঠকের পর উভয় দেশের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক ও জ্বালানি ক্ষেত্রের যৌথ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। সফর শেষে রুশ প্রতিনিধি দলের বিদায়ের মধ্য দিয়ে আলোচনাগুলোর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে।

বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক ভূরাজনীতি দ্রুত পরিবর্তনশীল। এই প্রেক্ষাপটে ভারত, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র—তিন দেশের সম্পর্ক ও অবস্থান ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত ভারসাম্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগত পরিবর্তন এবং ভারত–রাশিয়া সম্পর্কের নতুন মাত্রা কীভাবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বিশ্ব অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে, তা এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিবিড় পর্যবেক্ষণের বিষয়।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com