1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘাত বৃদ্ধি, মধ্যস্থতায় উদ্যোগী যুক্তরাষ্ট্র সচিবালয়ে ভাতা দাবিতে অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করে নন-ক্যাডার কর্মচারীরা মেগা প্রকল্প বন্ধ করে মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগের অঙ্গীকার তারেক রহমানের ইমরান খানের সাক্ষাৎ নিষেধাজ্ঞা ঘিরে আদিয়ালা কারাগারে উত্তেজনা, পুলিশের অভিযান অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার সুরক্ষায় স্থায়ী কাঠামো গঠনের ওপর জোর এসআই আফতাব উদ্দিন রিগানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, তদন্তে পুলিশ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সংলাপের দ্বাদশ বৈঠক শুরু নির্বাচন তফসিল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করছে নির্বাচন কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত আওয়ামী লীগবিষয়ক জনপ্রিয়তা জরিপের নৈতিকতা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের প্রশ্ন

ধারনির্ভরতা নয়, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বৃদ্ধিই টেকসই উন্নয়নের শর্ত

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ০ বার দেখা হয়েছে

 

অর্থনীতি ডেস্ক

দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই করতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলে মত দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বহির্বিশ্ব থেকে ধার বা দাতাদের সহায়তার ওপর নির্ভরশীলতা বাড়লে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকিতে পড়ে এবং উন্নয়নকাঠামো স্থায়ী ভিত্তি লাভ করতে পারে না। বুধবার, ১০ ডিসেম্বর সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ভবনে ‘জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সেমিনারে বক্তারা জানান, দেশের ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত দীর্ঘদিন ধরেই ৬ দশমিক ৬ থেকে ৭ দশমিক ৮ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে, যা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় কম। এর ফলে উন্নয়ন ব্যয় নির্বাহ, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন, অবকাঠামো সম্প্রসারণ এবং সরকারি খাতে সেবার মানোন্নয়নে সরকারের ওপর ধার ও অনুদানের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়ে যায়। ড. সালেহউদ্দিন বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বৃদ্ধি ছাড়া উন্নয়নকে গতিশীল রাখার সুযোগ নেই, এবং অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর পথ।

তিনি বলেন, ভ্যাট ও কর আদায়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি, যাতে রাজস্বরূপে সংগৃহীত অর্থ সম্পূর্ণভাবে সরকারের কোষাগারে পৌঁছে। আদায় প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপে কারচুপি, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বিপুল অর্থ হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যা রাজস্ব সংগ্রহকে আরও দুর্বল করে। স্বচ্ছতা বাড়াতে প্রশাসনিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থার প্রসারও অপরিহার্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সেমিনারে আলোচকরা জানান, দেশে ভ্যাটভিত্তিক রাজস্ব সংগ্রহ জিডিপির তুলনায় এখনও কম। ভ্যাট সংস্কার, ব্যবসায়ীদের জন্য সহজব্যবস্থাপনা, ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন, ই-ফাইলিং ও ই-পেমেন্ট ব্যবস্থার সম্প্রসারণ রাজস্ব বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। একই সঙ্গে বড় করদাতা ইউনিট ও আমদানি পর্যায়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হলে রাজস্ব আহরণ আরও বাড়বে।

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে কর প্রদানের সংস্কৃতি গড়ে তোলা সময়ের দাবি। কর ও ভ্যাট প্রদানকে সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণের মানসিকতা শক্তিশালী না হলে রাজস্ব কাঠামো সুসংহত হয় না। উন্নত ও উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের লক্ষ্যে কর প্রদানে অনীহা কমাতে সচেতনতা কার্যক্রম এবং কর ব্যবস্থা সহজীকরণের ওপর জোর দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, অর্থনীতিকে দীর্ঘমেয়াদে শক্তিশালী করতে শুধুমাত্র ভ্যাট নির্ভর ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। আয়করের আওতা সম্প্রসারণ, নতুন করদাতা অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং উচ্চ-আয়ের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের করকম্প্লায়েন্স নিশ্চিত করা হলে রাজস্ব কাঠামো স্থিতিশীল হবে। এ ছাড়া করনীতি ও করপ্রশাসনের সমন্বিত সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করলে দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বৃদ্ধি পাবে এবং উন্নয়ন ব্যয় নিজস্ব উৎস থেকেই পরিচালিত করা সম্ভব হবে।

সেমিনারে উপস্থিত অর্থনীতি বিশ্লেষক ও কর কর্মকর্তারা বলেন, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কর ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ জরুরি। ব্যবসায়বান্ধব করনীতি, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, ঝুঁকি-ভিত্তিক অডিট এবং করফাঁকি রোধে প্রযুক্তি ব্যবহারের মতো পদক্ষেপ রাজস্ব আহরণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকেও সতর্ক থাকতে হবে।

এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে করদাতাদের জন্য বিভিন্ন সেবা সহজীকরণ ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে স্বেচ্ছায় কর প্রদানকে উৎসাহিত করা এবং করদাতাদের সঙ্গে প্রশাসনের সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্য রয়েছে। তারা বলেন, জাতীয় রাজস্ব কাঠামোকে শক্তিশালী করতে শুধু নতুন কর আরোপ নয়, বিদ্যমান ব্যবস্থার সংস্কার ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

সেমিনারে অংশ নেওয়া সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বৃদ্ধির সফলতা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রাজস্ব সংগ্রহ বাড়লে উন্নয়নকাজ দ্রুত এগোবে, আন্তর্জাতিক ঋণ নির্ভরতা কমবে এবং অর্থনীতি বহিরাগত প্রভাবের ঝুঁকি থেকে অধিকতর সুরক্ষিত থাকবে। সেমিনারে অর্থনীতি বিশ্লেষক, কর কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com