নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ;বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার আসামি এ এস এম নাজমুস সাদাত আদালতে দাবি করেছেন, হলের বড় ভাইদের কথায় সেদিন আবরারকে তিনি ডেকে আনেন। পরে বুয়েটের মনিরসহ কয়েকজন তাঁকে মারধর করেন। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বুধবার রিমান্ড শুনানির সময় এ কথা বলেন নাজমুস সাদাত।
আবরার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার নাজমুস সাদাতকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত নাজমুস সাদাতের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, নাজমুস সাদাতের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালত এই আসামির কাছে জানতেন চান, তাঁর কোনো বক্তব্য আছে কি না। জবাবে আসামি নাজমুস সাদাত বলেন, হলের বড় ভাইদের কথায় সেদিন তিনি আবরারকে ডেকে নিয়ে এসেছিলেন। হলের বড় ভাইয়েরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন।
আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ইতিমধ্যে বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক অনিক সরকারসহ ছয়জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আসামি ইফতি মোশাররফ বলেছেন, আবরারের ডিভাইসগুলো তাঁরা যখন চেক করছিলেন, তখন মেহেদী হাসান এবং বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম ওরফে জিয়ন কক্ষে আসেন। মেহেদী তাঁদের বুয়েটে কারা কারা শিবির করে, তা আবরারের কাছ থেকে বের করার জন্য নির্দেশ দেন। এ সময় মেহেদী বেশ কয়েকটি চড় মারেন আবরারকে।
জবানবন্দিতে ইফতি মোশাররফ আদালতকে আরও বলেন, অনিক সরকার স্ট্যাম্প দিয়ে আবরারের হাঁটু, পা, পায়ের তালু ও বাহুতে মারতে থাকেন। এতে আবরার উল্টাপাল্টা কিছু নাম বলতে শুরু করেন। তখন মেফতাহুল আবরারকে চড় মারেন এবং স্ট্যাম্প দিয়ে হাঁটুতে বাড়ি দেন।
আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। শেরেবাংলা হলের নিচতলায় ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি। ৬ অক্টোবর রাতে তাঁকে নিজ কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।