আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আগামী ১৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস ও দাপ্তরিক কার্যক্রমের কারণে ঢাকায় অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাস তাদের ভিসা গ্রহণ ও জমা দেওয়ার সকল কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। দূতাবাসের এক সরকারি বার্তায় জানানো হয়েছে যে নির্ধারিত সময়কালে নতুন ভিসা আবেদন গ্রহণ, নথি যাচাই বা ভিসা ইস্যুর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে।

দূতাবাসের এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণের প্রস্তুতিতে থাকা শিক্ষার্থী, পেশাজীবী, পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন ভিসা আবেদন সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে। তবে ১৪ ডিসেম্বরের আগে যারা ভিসার জন্য আবেদন করেছেন, তারা তাদের পূর্বনির্ধারিত তারিখে পাসপোর্ট ও ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে। এতে চলমান আবেদনগুলো নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী প্রক্রিয়াধীন থাকবে এবং ইতোমধ্যে গৃহীত নথি হস্তান্তর কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে না।

ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাস সাধারণত শিক্ষা, পর্যটন, বাণিজ্যিক সফরসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা প্রদান করে থাকে। বছরের শেষ দিকে বিভিন্ন সরকারি ছুটি, দূতাবাসের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কাজ এবং প্রক্রিয়াগত হালনাগাদের কারণে অনেক দূতাবাসেই নথি গ্রহণ বা ভিসা ইস্যু কার্যক্রম সাময়িকভাবে ধীর হয়ে যায়। চলতি বছর ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসও একই কারণে ভিসা প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভিসা কার্যক্রম স্থগিতের এই সময়ে নতুন আবেদনকারীরা অনলাইনে কিংবা সরাসরি কোনও নথি জমা দিতে পারবেন না। ফলে যারা ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে বা জানুয়ারির শুরুতে ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন, তাদের যাত্রা সূচিতে পরিবর্তন আনতে হতে পারে। বিশেষ করে শিক্ষার্থী বা গবেষণা-ভিত্তিক ভ্রমণকারীদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা ও অনুমোদন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হতে পারে। এ কারণে আবেদনকারীদের ভ্রমণ পরিকল্পনা নতুন সময়সূচি অনুযায়ী পুনর্গঠন করার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

দূতাবাসের ঘোষণায় আরও জানানো হয়েছে যে আগামী ৪ জানুয়ারি থেকে পুনরায় নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হবে। এই তারিখ থেকে সকল ধরনের ভিসা আবেদন জমা, নথি যাচাই, কাগজপত্র গ্রহণ ও ভিসা ইস্যুর কার্যক্রম পুনর্বহাল হবে। এতে নতুন আবেদনকারীরা ২০২৫ সালের শুরু থেকেই আবারও ভিসা প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য, শিক্ষা, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ করেন; বিশেষ করে বালি, জাকার্তা ও যোগ্যাকার্তার মতো জনপ্রিয় পর্যটনস্থলগুলোতে তাদের যাতায়াত বেড়েছে। একই সঙ্গে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত হওয়ায় ব্যবসায়িক সফরের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব কারণে দূতাবাসের ভিসা সাময়িক স্থগিতাদেশের প্রভাব কিছু মাত্রায় ভ্রমণকারীদের পরিকল্পনায় পড়তে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের সাময়িক স্থগিতাদেশ সাধারণত বছরের নির্দিষ্ট সময়ে দূতাবাসগুলোর কাজের চাপ, প্রশাসনিক সমন্বয় এবং নিরাপত্তা-সংক্রান্ত প্রটোকলের কারণে হয়ে থাকে। পুনরায় কার্যক্রম চালু হলে ভিসা প্রক্রিয়া স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসবে এবং আবেদনকারীরা নিয়মিতভাবে ভিসা সেবা পেয়ে থাকবেন।

ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণে আগ্রহী আবেদনকারীদের দূতাবাসের ওয়েবসাইট ও সরকারি বিজ্ঞপ্তি নিয়মিত অনুসরণ করতে বলা হয়েছে, যাতে ভিসা আবেদন সংক্রান্ত যেকোনো আপডেট দ্রুত জানা যায়। পাশাপাশি যাদের জরুরি ভিত্তিতে বিদেশ ভ্রমণ প্রয়োজন হতে পারে, তাদের বিকল্প পরিকল্পনা বিবেচনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

দূতাবাসের ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ভিসা গ্রহণ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এবং ৪ জানুয়ারি থেকে পুনরায় স্বাভাবিক নিয়মে ভিসা আবেদন গ্রহণ শুরু হবে। এই সাময়িক স্থগিতাদেশের মাধ্যমে দূতাবাসের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কাজ সম্পন্ন করার পাশাপাশি আগামি বছরের ভিসা সেবা আরও কার্যকরভাবে পরিচালনার সুযোগ তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।