খেলাধুলা ডেস্ক
আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের এই বৈশ্বিক আসরে গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা অলিভার পিকের নেতৃত্বে অংশ নেবে। দলে রয়েছে ভারত ও শ্রীলঙ্কার বংশোদ্ভূত চার ক্রিকেটার এবং চীন বংশোদ্ভূত একজন ক্রিকেটার, যা এবারের স্কোয়াডকে সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় করেছে।
অস্ট্রেলিয়া দল গ্রুপ ‘সি’-তে শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড ও জাপানের বিপক্ষে লড়বে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে জানুয়ারির প্রথম দিকে নামিবিয়ায় পৌঁছাবে দলটি। সেখানে ৯ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারিত ওয়ার্মআপ ম্যাচে অংশ নিয়ে নিজেদের প্রস্তুতি পরখ করবে তারা। ১৬ দলের এ প্রতিযোগিতা ২৩ দিনে মোট ৪১টি ম্যাচের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। চারটি গ্রুপে চারটি করে দল নিয়ে প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হবে, যার মাধ্যমে শীর্ষ তিন দল সুপার সিক্স পর্বে উঠবে।
ঘোষিত অস্ট্রেলিয়া দলে ভারতীয় বংশোদ্ভূত আরিয়ান শর্মা ও জন জেমস, শ্রীলঙ্কান বংশোদ্ভূত নাদেন কুরে ও নিতেশ স্যামুয়েল এবং চাইনিজ বংশোদ্ভূত অ্যালেক্স লি ইয়ং অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে এই স্কোয়াড গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের কোচ টিম নিলসেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় যারা নিজেদের সক্ষমতা দেখিয়েছে এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দক্ষতা প্রদর্শন করেছে, তাদেরই বেছে নেওয়া হয়েছে। কোচের মতে, দলটির ভারসাম্য ও ভূমিকা বণ্টন এমনভাবে সাজানো হয়েছে যা প্রতিটি ম্যাচের পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে সেরা পারফরম্যান্স উপহার দিতে সহায়ক হবে।
সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ এবং সাম্প্রতিক জাতীয় যুব চ্যাম্পিয়নশিপে যারা উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স করেছেন, তাদের পারফরম্যান্সই মূল বিবেচ্য ছিল নির্বাচকদের কাছে। অনেক খেলোয়াড় ইতোমধ্যেই জাতীয় দলের সিনিয়রদের সঙ্গে অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছেন, যা তরুণ ক্রিকেটারদের প্রস্তুতিতে বাড়তি সুবিধা দেবে। বাকি ক্রিকেটারদেরও দ্রুত উন্নতির পথে বলে জানিয়েছেন কোচ নিলসেন। তাঁর বিশ্বাস, বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে নিজেদের প্রতিভা প্রমাণে তরুণদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হয়ে উঠবে।
অস্ট্রেলিয়া ১৬ জানুয়ারি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ দিয়ে শিরোপা ধরে রাখার মিশন শুরু করবে। এরপর দলটি জাপান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবে। গ্রুপ পর্ব শেষে সুপার সিক্সে ১২টি দল দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পরবর্তী পর্বে অংশ নেবে। সেখান থেকে প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল সেমিফাইনালে উঠবে। ৬ ফেব্রুয়ারি ফাইনালের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ আসর শেষ হবে।
অস্ট্রেলিয়ার অনূর্ধ্ব-১৯ দলটি ঐতিহ্যগতভাবে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে অন্যতম শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচিত। গত আসরের সাফল্য ধরে রাখতে এবারও তারা পরিকল্পিত ও কৌশলগত পদ্ধতিতে দল সাজিয়েছে। দলে অভিজ্ঞতা ও উদীয়মান প্রতিভার সমন্বয় রয়েছে, যা দীর্ঘ টুর্নামেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কন্ডিশন, ম্যাচ ঘনত্ব ও প্রতিপক্ষের শক্তি বিবেচনায় ধারাবাহিকতা বজায় রেখে প্রতিটি ম্যাচে সেরা দল নিয়ে মাঠে নামাই হবে তাদের প্রধান লক্ষ্য।
টুর্নামেন্টটি ভবিষ্যৎ তারকা খুঁজে বের করার ক্ষেত্র হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এই প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে অনেক ক্রিকেটার ভবিষ্যতে জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়ার পথ তৈরি করে। তাই অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতিটি সিদ্ধান্ত ও প্রস্তুতি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়েই সাজানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্কোয়াডের সদস্যরা কেমন পারফর্ম করেন, তা নজর থাকবে ক্রিকেটবিশ্বের।
যুব বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াড
অলিভার পিক (অধিনায়ক), ক্যাসে বার্টন, নাদেন কুরে, জেইডেন ড্র্যাপার, বেন গর্ডন, স্টিভেন হোগান, থমাস হোগান, জন জেমস, চার্লস ল্যাচমুন্ড, উইল মালাজচুক, নিতেশ স্যামুয়েল, হেইডেন শিলার, আরিয়ান শর্মা, উইলিয়াম টেইলর ও অ্যালেক্স লি ইয়ং.