খেলাধুলা ডেস্ক
ভারত ও শ্রীলঙ্কার যৌথ আয়োজনে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ২০২৬ সালের আইসিসি পুরুষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পূর্ণাঙ্গ সূচি ও গ্রুপ বিন্যাস আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। ২০ দল নিয়ে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ পড়েছে শক্তিশালী ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দল।
আইসিসি ঘোষিত সূচি অনুযায়ী, এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মোট ২০টি দল অংশ নিচ্ছে, যাদের চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রুপে রয়েছে পাঁচটি করে দল। গ্রুপ পর্ব শেষে প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুটি দল সুপার এইট পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। এরপর সুপার এইট থেকে সেমিফাইনাল ও ফাইনালের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে চ্যাম্পিয়ন।
গ্রুপ ‘সি’-তে বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নেপাল ও ইতালি। ক্রিকেট পরাশক্তি ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচগুলোকে গ্রুপ পর্বের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে নেপাল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ধারাবাহিক উন্নতি দেখিয়েছে এবং ইতালি প্রথমবারের মতো বড় পরিসরের এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে।
গ্রুপ বিন্যাস অনুযায়ী, গ্রুপ ‘এ’-তে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, নামিবিয়া ও নেদারল্যান্ডস। গ্রুপ ‘বি’-তে খেলবে অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড ও ওমান। গ্রুপ ‘ডি’-তে স্থান পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই বিন্যাসে প্রতিটি গ্রুপেই শক্তিশালী ও তুলনামূলক নতুন দলের সমন্বয় রাখা হয়েছে।
সূচি অনুযায়ী, বাংলাদেশের গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে ভারতের কলকাতা ও মুম্বাইয়ে। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিনে, ৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় বিকেল ৩টায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি সকালে একই ভেন্যুতে ইতালির বিপক্ষে খেলবে দলটি। গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ম্যাচে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কলকাতায় ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ১৭ ফেব্রুয়ারি মুম্বাইয়ে, যেখানে সন্ধ্যায় তাদের প্রতিপক্ষ নেপাল।
গ্রুপ পর্বের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই নির্ধারিত হবে বাংলাদেশের সুপার এইটে ওঠার ভাগ্য। শক্তিশালী দুই দলের বিপক্ষে ভালো ফল এবং তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে জয় নিশ্চিত করা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। বিশেষ করে শুরুটা ভালো করতে পারলে পরবর্তী ম্যাচগুলোতে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর সুযোগ পাবে দলটি।
আইসিসির সূচি অনুযায়ী, গ্রুপ পর্ব চলবে ৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে সুপার এইট পর্ব, যা চলবে ১ মার্চ পর্যন্ত। সুপার এইটের ম্যাচগুলো ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি গ্রুপ থেকে ওঠা দলগুলো নতুন দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে একে অপরের বিপক্ষে লড়বে।
নকআউট পর্বের সূচি অনুযায়ী, ৪ ও ৫ মার্চ দুটি সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ৮ মার্চ ফাইনালের মাধ্যমে পর্দা নামবে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। সেমিফাইনাল ও ফাইনালের ভেন্যু পরবর্তীতে চূড়ান্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ভারত ও শ্রীলঙ্কার মাঠে অনুষ্ঠিতব্য এই বিশ্বকাপকে ঘিরে ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ ইতোমধ্যেই বেড়েছে। বাংলাদেশের জন্য এবারের আসরটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ রয়েছে। শক্তিশালী গ্রুপে ভালো ফল করতে পারলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থান আরও দৃঢ় হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।