জেলা প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় একটি ধর্মীয় শিক্ষা কার্যক্রম উপলক্ষে আয়োজিত ওয়াজ মাহফিলে অংশ নিতে বাংলাদেশে আসছেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী সাইয়েদ মাজহার সাঈদ শাহ। আগামী বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, উপজেলার আব্দুল্লাহপুর এলাকার কাছিমিয়া বাইতুল উলূম মাদরাসা প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করবেন বলে আয়োজক সূত্রে জানা গেছে।
মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির হাফেজ শিক্ষার্থীদের পাগড়ি প্রদান অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এই ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এ ধরনের অনুষ্ঠানে কোরআনে হাফেজ হওয়া শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী সাইয়েদ মাজহার সাঈদ শাহকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
আয়োজকদের তথ্য অনুযায়ী, সাইয়েদ মাজহার সাঈদ শাহ একজন ধর্মীয় চিন্তাবিদ হিসেবে পরিচিত এবং উপমহাদেশের ইসলামী শিক্ষার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরীর বংশধর। তিনি আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরীর পৌত্র। এই পরিচয়ের কারণে ধর্মীয় অঙ্গনে তার একটি পরিচিতি রয়েছে বলে আয়োজকেরা উল্লেখ করেন। তবে অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় শিক্ষায় উৎসাহিত করা এবং কোরআন হিফজ সম্পন্নকারীদের সম্মাননা প্রদানকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, ওয়াজ মাহফিলে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন আলেম-ওলামা, মাদরাসা শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। অনুষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা, নৈতিকতা, সমাজে ইসলামী মূল্যবোধের চর্চা এবং কোরআন শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় মুসল্লিদের পাশাপাশি আশপাশের উপজেলা ও জেলা থেকেও আগতদের অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে মাদরাসা প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগত অতিথি ও মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ নির্ধারণ, স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বড় পরিসরের জমায়েতের কারণে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে স্থানীয়ভাবে নির্দেশনাও দেওয়া হতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গীবাড়ি উপজেলার ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কাছিমিয়া বাইতুল উলূম মাদরাসা একটি পরিচিত প্রতিষ্ঠান। নিয়মিতভাবে এখানে কোরআন শিক্ষা, হাদিস, ফিকহসহ বিভিন্ন ইসলামী বিষয়ের পাঠদান করা হয়। হাফেজ শিক্ষার্থীদের পাগড়ি প্রদান অনুষ্ঠান মাদরাসাটির বার্ষিক গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনগুলোর একটি, যেখানে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অংশগ্রহণ থাকে।
পাকিস্তানের একজন মন্ত্রী পর্যায়ের অতিথির উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ে বাড়তি আগ্রহ দেখা গেলেও আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এটি মূলত একটি ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান। কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি বা বক্তব্য এ অনুষ্ঠানের অংশ নয়। অনুষ্ঠানটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ ধরনের আন্তর্জাতিক অতিথির অংশগ্রহণ স্থানীয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে নতুন করে আলোচনায় আনতে পারে এবং ধর্মীয় শিক্ষা বিনিময়ের ক্ষেত্রে একটি সুযোগ তৈরি হতে পারে। একই সঙ্গে বড় জমায়েতের কারণে স্থানীয় প্রশাসন ও আয়োজকদের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ প্রস্তুতি অব্যাহত রেখেছে এবং নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সব কার্যক্রম বাস্তবায়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।