খেলাধুলা ডেস্ক
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ব্রাইটনের বিপক্ষে ম্যাচে বদলি হিসেবে নেমে একটি গোলের সহায়তা করে লিভারপুলের ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহ ক্লাব ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়েছেন। নির্দিষ্ট একটি ক্লাবের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে সর্বাধিক গোল-ইনভলভমেন্টের মালিক হয়েছেন তিনি, পেছনে ফেলেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক অধিনায়ক ওয়েইন রুনিকে।
ম্যাচের শুরুতে লিভারপুলের শুরুর একাদশে ছিলেন না সালাহ। কোচ আর্নে স্লট তাকে বেঞ্চে রেখেই দল সাজান। তবে ম্যাচের ২৬ মিনিটে ডিফেন্ডার জোসেফ গোমেজ চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লে বদলি হিসেবে নামেন মিশরীয় এই ফরোয়ার্ড। মাঠে নামার পরপরই আক্রমণভাগে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে লিভারপুলের দ্বিতীয় গোলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসিস্ট করেন সালাহ, যা ছিল প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের জার্সিতে তার মোট গোল-ইনভলভমেন্ট সংখ্যা ২৭৭-এ উন্নীত করার মুহূর্ত।
প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের হয়ে সালাহ এখন পর্যন্ত ১৮৮টি গোল এবং ৮৯টি অ্যাসিস্ট করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন ওয়েইন রুনিকে, যিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে ১৮৩টি গোল ও ৯৩টি অ্যাসিস্ট করেছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে রুনির দখলে থাকা এই রেকর্ড ভাঙার মাধ্যমে সালাহ ইংলিশ শীর্ষ লিগের ইতিহাসে নিজের অবস্থান আরও দৃঢ় করেছেন।
ব্রাইটনের বিপক্ষে ম্যাচে বদলি হিসেবে নামলেও সালাহ পুরো ম্যাচজুড়ে প্রভাব বিস্তার করেন। গোলের লক্ষ্যে তিনি তিনটি শট নেন এবং সতীর্থদের জন্য পাঁচটি গোলের সুযোগ তৈরি করেন। ম্যাচের শেষভাগে নিজেও গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। তবে ফেদেরিকো চিয়েসার কাছ থেকে পাওয়া একটি পাস ছয় গজ বক্সের বাইরে ফাঁকায় পেয়ে শটটি লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। গোল করতে না পারলেও তার পারফরম্যান্স লিভারপুলের আক্রমণভাগে গতি ও ভারসাম্য এনে দেয়।
সাম্প্রতিক সময়ে নিয়মিত একাদশে জায়গা না পাওয়া এবং ধারাবাহিক ম্যাচ খেলার সুযোগ সীমিত থাকায় সালাহর ম্যাচ ফিটনেস ও ফর্ম নিয়ে আলোচনা চলছিল। সবশেষ তিনি লিভারপুলের হয়ে পুরো ৯০ মিনিট খেলেছিলেন গত ২৭ নভেম্বর পিএসভি আইন্দোভেনের বিপক্ষে ম্যাচে। ওই ম্যাচে লিভারপুল ৪-১ গোলে পরাজিত হয় এবং সালাহও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারেননি। এরপর ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে ম্যাচে তিনি দলের স্কোয়াডেই ছিলেন না। সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন তিনি।
লিগে লিডস ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচেও শুরুর একাদশে জায়গা পাননি সালাহ। পরবর্তীতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের একটি ম্যাচে ইতালি সফরেও তাকে ছাড়াই দল পাঠান কোচ আর্নে স্লট। এসব কারণে চলতি মৌসুমে সালাহর ভূমিকা ও ব্যবহার নিয়ে নানা আলোচনা তৈরি হয়। তবে ব্রাইটনের বিপক্ষে ম্যাচে বদলি নেমে গোলের সহায়তা করার মাধ্যমে তিনি নিজের কার্যকারিতা আবারও প্রমাণ করেছেন।
ম্যাচ শেষে মাঠ ছাড়ার সময় দর্শকদের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পান সালাহ। গ্যালারিতে তার নামাঙ্কিত জার্সি ও ব্যানার দেখা যায়। সমর্থকদের উদ্দেশে হাততালি দিয়ে তিনি কৃতজ্ঞতা জানান। গোল না পেলেও গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ড স্পর্শ করা এবং দলের জয়ে অবদান রাখার কারণে এই ম্যাচটি সালাহর জন্য তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে থাকবে।
লিভারপুলের চলমান মৌসুমে শিরোপা লড়াই ও ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার লক্ষ্য পূরণে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এমন সময়ে সালাহর মতো পরীক্ষিত ফরোয়ার্ডের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স ও অবদান দলের আক্রমণভাগকে আরও শক্তিশালী করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।