নিজস্ব প্রতিবেদক
আগের উপদেষ্টার কাজের প্রশংসা করে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, যুব ও ক্রীড়া খাতে ইতিবাচক ধারাবাহিকতা বজায় রেখে স্বল্প সময়ের মধ্যেই অগ্রাধিকারভিত্তিক কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হবে। দায়িত্বকাল সীমিত হলেও দুর্নীতিবিরোধী অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রাজধানীর বাইরে স্থানীয় পর্যায়ে ক্রীড়া কার্যক্রমে গতি আনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
রোববার রাজধানীতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আগের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার নেতৃত্বে যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তার সময়কালে নেওয়া উদ্যোগগুলো ফলপ্রসূ হয়েছে এবং সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখাই বর্তমান দায়িত্বের অন্যতম লক্ষ্য। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে শুরু হওয়া কার্যক্রমগুলো থামিয়ে না রেখে সেগুলোর বাস্তবায়ন জোরদার করা হবে, যাতে মাঠপর্যায়ে এর সুফল দৃশ্যমান হয়।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা জানান, বর্তমান দায়িত্বকাল প্রায় দুই মাসের মতো সংক্ষিপ্ত। এই স্বল্প সময়ে সব ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন করা সম্ভব না হলেও কিছু মৌলিক ও জরুরি বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি আনার চেষ্টা থাকবে। তিনি বলেন, যুব ও ক্রীড়া খাতে দীর্ঘদিন ধরে ওঠা দুর্নীতিবিরোধী অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করা হবে এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে করে খাতটির প্রতি জনআস্থা বাড়বে এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
স্থানীয় পর্যায়ে ক্রীড়া কার্যক্রমের প্রসার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, রাজধানীকেন্দ্রিক কার্যক্রমের বাইরে গিয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে খেলাধুলার সুযোগ বাড়ানো জরুরি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদরা অনেক সময় পর্যাপ্ত সুযোগ ও অবকাঠামোর অভাবে পিছিয়ে পড়ে। এই বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যক্রম জোরদার করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ, প্রতিযোগিতা এবং অবকাঠামো ব্যবহারে সমতা আনাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
তিনি আরও জানান, যুব উন্নয়ন কার্যক্রমের ক্ষেত্রেও বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর কার্যকারিতা পর্যালোচনা করা হবে। প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানমুখী কর্মসূচিগুলো যাতে বাস্তব চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যুবসমাজকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরের লক্ষ্যে চলমান প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী অগ্রাধিকারভিত্তিক একটি কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এতে দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ, চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি মূল্যায়ন এবং মাঠপর্যায়ে ক্রীড়া কার্যক্রম সম্প্রসারণের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে। স্বল্প সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নযোগ্য কাজগুলো আলাদাভাবে চিহ্নিত করে তা দ্রুত কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুব ও ক্রীড়া খাত দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। ক্রীড়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়, আর যুব উন্নয়ন কার্যক্রম কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এ কারণে এই খাতে স্বচ্ছতা ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান উপদেষ্টার ঘোষিত অগ্রাধিকারগুলো বাস্তবায়িত হলে মাঠপর্যায়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে তারা মনে করছেন।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, দায়িত্বকাল স্বল্প হলেও আন্তরিকতা ও সঠিক অগ্রাধিকার নির্ধারণের মাধ্যমে কিছু কার্যকর পরিবর্তন আনা সম্ভব। তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন এবং বলেন, সম্মিলিত উদ্যোগেই যুব ও ক্রীড়া খাতকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।