জাতীয় ডেস্ক
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি বর্তমানে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে অপারেশন করানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই তথ্য তিনি নিজে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেছেন।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকার বিজয়নগর এলাকার বক্স কালভার্টের সামনে শরিফ ওসমান হাদিকে প্রকাশ্যে গুলি করা হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত অবস্থায় তার জীবন রক্ষা করতে স্থানীয় চিকিৎসকরা তৎপর হয়ে ওঠেন এবং প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) তাকে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরে প্রেরণ করা হয়। ওইদিন দুপুর ১টার দিকে ঢাকা এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত নেয়া হয়। দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুরের সেলেতার বিমানবন্দরে অবতরণ করে এবং রাত ৭টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ওসমান হাদির পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তার জীবন রক্ষার জন্য দোয়া করা হচ্ছে এবং চিকিৎসার প্রতিটি ধাপেই তারা সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো আহত প্রার্থীর নিরাপত্তা এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে ঘটনাস্থল ও ঘটনার তদন্ত করছে।
আপাতত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হত্যাকাণ্ডের তদন্তে জোর দিচ্ছে। তারা অভিযুক্তদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের পাশাপাশি, সম্ভব হলে যদি কোনো আসামী দেশান্তরিত হয়ে থাকে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে তাকে ফেরত আনার বিষয়েও কাজ করছে। এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজে নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক সহিংসতা প্রতিরোধের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঘটনাস্থলের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, প্রকাশ্যে গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় শরিফ ওসমান হাদি সাধারণ মানুষ ও কর্মীদের সঙ্গে ছিলেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটি এবং রাজনৈতিক সহিংসতার প্রেক্ষাপট এই হামলার ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে। দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে এ ধরনের ঘটনা ভোটপ্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, আহত প্রার্থীর দ্রুত আরোগ্য এবং সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নির্বাচনী এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি, রাজনৈতিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের হামলা রাজনৈতিক প্রার্থী এবং ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা উভয়ের জন্যই গুরুতর চ্যালেঞ্জ। তাই সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনী এলাকায় নিরাপত্তা ও সংহতির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।