রাশিদুল হাসান বুলবুল
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও নাট্যজগতে অনেক নায়িকা পারিবারিক জীবনের সঙ্গে পেশাগত জীবনকে সমন্বয় করেছেন। তবে কিছু নায়িকার ক্ষেত্রে দাম্পত্য জীবন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি এবং তারা পুনরায় বিয়ের পথে যাননি। তাদের জীবনের এই দিকটি শিল্পকলার বাইরে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়।
অভিনেত্রী ববিতা পারিবারিকভাবে ব্যবসায়ী ইফতেখার চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে করেছিলেন। দুই বছরের সংসারের পর তাদের সম্পর্ক শেষ হয়। তাদের একমাত্র ছেলে অনীক বর্তমানে কানাডায় বসবাস করছেন। ববিতা এখন অভিনয় থেকে দূরে রয়েছেন এবং প্রধানত ছেলের সঙ্গে সময় কাটান।
অঞ্জু ঘোষ ১৯৮২ সালে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন এবং নির্মাতা এফ. কবির চৌধুরীর হাত ধরে বড় পর্দায় আসেন। তাদের প্রেমের সম্পর্কের পর অঞ্জু ঘোষ এফ. কবির চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে করেন, তবে সংসার দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কলকাতায় দীর্ঘদিন প্রবাস জীবনযাপন করছেন তিনি।
জয়া আহসান মডেল ও অভিনেতা মোহাম্মদ ফয়সাল আহসান উল্লাহকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। ১৩ বছরের সংসারের পর ২০১১ সালে তারা আলাদা হন। বর্তমানে জয়া দুই বাংলার চলচ্চিত্রে অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন এবং পুনরায় বিয়ে করেননি।
ঢাকার চলচ্চিত্রে জয়শ্রী রায়কে ‘সূর্য কন্যা’ ছবির মাধ্যমে পরিচয় করিয়ে দেন নির্মাতা আলমগীর কবির। কাজের সূত্রে তাদের মধ্যে প্রেম গড়ে ওঠে এবং তারা বিয়ে করেন। সংসার দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ায় ১৯৮৯ সালে সন্তান লেনিন সৌরভ কবিরকে নিয়ে জয়শ্রী লন্ডনে চলে যান এবং শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হন।
শাবনূর ২০১২ সালে সহশিল্পী অনীককে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে পুত্র সন্তান আইজেন রয়েছে। ২০২০ সালে দাম্পত্য জীবনে বনিবনা না হওয়ার কারণে শাবনূর ডিভোর্স দেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন এবং ব্যবসা ও সন্তানের দেখাশোনায় ব্যস্ত রয়েছেন।
আফসানা মিমি নাট্যদল নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত থাকাকালীন গাজী রাকায়েতের সঙ্গে পরিচয় ও প্রেমের পর বিয়ে করেন। ১৯৯৬ সালে তাদের সংসার ভেঙে যায় এবং এরপর মিমি পুনরায় বিয়ে করেননি।
অপু বিশ্বাস চিত্রনায়ক শাকিব খানের সঙ্গে ২০০৮ সালে গোপন বিয়ে করেন। ২০১৭ সালে লাইভ সাক্ষাৎকারে এই বিয়ে ও সন্তানের তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর শাকিব ডিভোর্স দেন। এরপর অপু বিশ্বাস পুনরায় বিয়ে করেননি।
নিপুণ আক্তার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন স্বামী সাজ্জাদ হোসেন অপুকে। বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনি মেয়ে তানিশার সঙ্গে থাকেন। নিপুণ বর্তমানে টিউলিপ ফ্যাশন ও টিউলিপ নেইলস অ্যান্ড স্পা পরিচালনার পাশাপাশি অভিনয়েও যুক্ত আছেন।
সোহানা সাবা নির্মাতা মুরাদ পারভেজের সঙ্গে প্রেমের বিয়ের পর ১৭ মাসের মধ্যে বিচ্ছেদ পান। ছেলে বর্তমানে তার সঙ্গে বসবাস করছে।
ইপসিতা শ্রাবন্তী ব্যবসায়ী খোরশেদ আলমের সঙ্গে বিয়ে করেছিলেন। বনিবনার অভাবে ২০১৮ সালে তাদের সম্পর্ক শেষ হয়। দুই মেয়ে রাবিয়াহ আলম ও আরিশা আলমকে নিয়ে শ্রাবন্তী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।
মডেল ও উপস্থাপক নোভা নাট্যনির্মাতা রায়হান খানের সঙ্গে ২০১১ সালে বিয়ে করেন। ২০১৩ সালে পুত্র সন্তানের জন্মের পর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। নোভা এরপর পুনরায় বিয়ে করেননি।
এই নায়িকাদের ব্যক্তিগত জীবনের এই তথ্যগুলো তাদের পেশাগত জীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও পারিবারিক প্রেক্ষাপটও তুলে ধরে। দাম্পত্য জীবনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং বিচ্ছেদের পর একক জীবন যাপন তাদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনকে প্রভাবিত করেছে।