নিজস্ব প্রতিবেদক
লন্ডন সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ দেখতে রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হিমাগারে গেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। শনিবার সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তিনি সরাসরি সেখানে যান এবং মরদেহের পাশে কিছু সময় অবস্থান করেন।
দলীয় সূত্র জানায়, বিদেশ সফররত অবস্থায় শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর পেয়ে জামায়াত আমীর পূর্বনির্ধারিত সফরসূচি সংক্ষিপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। দেশে ফিরে তিনি কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচিতে অংশ না নিয়ে প্রথমেই নিহতের মরদেহ দেখার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমাগারে যান। সেখানে তিনি শহীদ ওসমান হাদির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং শোকসন্তপ্ত স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানান।
হিমাগারে অবস্থানকালে ডা. শফিকুর রহমান শহীদ ওসমান হাদির বড় দুই ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তাঁদের ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানান এবং পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। পরে সেখানে উপস্থিত জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি নিহতের রূহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন।
এ সময় জামায়াত আমীরের সঙ্গে দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মো. মোবারক হোসাইন, ঢাকা-১৭ আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. এস এম খালিদুজ্জামানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর পর্যায়ের একাধিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দলের নেতারা পৃথকভাবে নিহতের পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানান এবং তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
দলীয় নেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী, শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু জামায়াতে ইসলামীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাঁরা জানিয়েছেন, নিহতের জীবনের কর্মকাণ্ড ও রাজনৈতিক ভূমিকা দলীয় পর্যায়ে পর্যালোচনা করা হবে এবং তাঁর স্মরণে পরবর্তী সময়ে কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুর দুইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজায় জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমানসহ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা অংশগ্রহণ করবেন বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিদের জানাজায় অংশগ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে।
নামাজে জানাজা শেষে শহীদ ওসমান হাদির দাফন কার্যক্রম সম্পন্ন করার প্রস্তুতি চলছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দাফনের স্থান ও সময় সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও জানাজা ও দাফনকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
এদিকে, শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। দলীয় নেতারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। নিহতের পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।