জাতীয় ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সাইফুদ্দীন আহমদ জানান, এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পরিবার, সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে।
ড. সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পার্শ্বেই কাজী নজরুল ইসলাম সমাহিত আছেন। একই চত্বরে আরও কয়েকজন শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীর কবর রয়েছে। তিনি আরও জানান, মরদেহ দাফনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়েও সিন্ডিকেটের জরুরি বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
ওসমান হাদি ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১৫ ডিসেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে জরুরি অনলাইন বৈঠক অনুষ্ঠিত করে দাফনের স্থান নির্ধারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, এ ধরনের মর্যাদাপূর্ণ দাফন কর্মসূচি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে নিরাপত্তা, পরিবহন ও উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কাজী নজরুল ইসলামের কবরকে ঘিরে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থী ও বুদ্ধিজীবীদের সমাহিত করা হয়েছে। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ দাফন অনুষ্ঠান সাধারণত উচ্চমাত্রার নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক তৎপরতার মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। ড. সাইফুদ্দীন আহমদ জানান, এই প্রথা অনুসরণ করে শরীফ ওসমান হাদির দাফনকেও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হবে।
এর আগে নির্বাচনী প্রচারণার সময় হামলার শিকার হওয়া শরীফ হাদির মৃত্যু জাতীয় রাজনীতিতেও শোকের ছায়া ফেলেছে। তার দাফন ও স্মৃতিসংক্রান্ত অনুষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রদায় এবং রাজনৈতিক দলের পর্যবেক্ষকের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, দাফন কার্যক্রম চলাকালে শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার সীমিত রাখা হবে এবং প্রশাসনিক তদারকিতে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। এছাড়া, মরদেহ দাফনের সময় উপস্থিতি ও পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন বিশেষ ব্যবস্থার ঘোষণা করবে।
শরীফ ওসমান হাদির দাফন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকরভাবে সম্পন্ন হলে এটি দেশের রাজনৈতিক ও শিক্ষামূলক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্ববহ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে।