নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের লিখিত অনুমতি পেয়েছে দলটি। রোববার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতির মধ্য দিয়ে রাজধানীতে দলটির পরিকল্পিত কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে এগিয়ে গেল।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘদিন পর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে রাজধানীতে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জননিরাপত্তা এবং প্রশাসনিক বিধিবিধান বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে লিখিত আবেদন করা হয়। আবেদন পর্যালোচনার পর নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে সংবর্ধনা আয়োজনের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।
রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর স্বাক্ষরিত অনুমতিপত্র বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর কাছে পাঠানো হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের স্টাফ জাহিদ হোসেন অনুমতিপত্রটি সরাসরি নয়াপল্টনে অবস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌঁছে দেন। সেখানে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও দপ্তর দায়িত্বপ্রাপ্ত সাত্তার পাটোয়ারী চিঠিটি গ্রহণ করেন।
দলীয় সূত্র জানায়, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনের জন্য প্রশাসনের নির্ধারিত নির্দেশনা মেনে চলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা এবং জনদুর্ভোগ এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে দলীয়ভাবে নির্দেশনা দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা রক্ষাকারী টিম গঠনের কাজ চলছে।
তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে উল্লেখযোগ্য তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দলটির নেতারা বলছেন, এই প্রত্যাবর্তন দলীয় রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। দীর্ঘদিন প্রবাসে অবস্থানের পর তারেক রহমানের দেশে ফেরা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমে নতুন গতি আনতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে দলীয় নেতৃত্ব কাঠামো, আন্দোলন-কর্মসূচি এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে এর প্রভাব পড়তে পারে।
প্রসঙ্গত, তারেক রহমান বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র। তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নীতিনির্ধারণে তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। তার প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপির শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বিএনপির জন্য একটি সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শনের সুযোগ তৈরি করবে। একই সঙ্গে প্রশাসনিক অনুমতি পাওয়ায় কর্মসূচি বাস্তবায়নে আইনি ও প্রক্রিয়াগত জটিলতা কমেছে। তবে অনুষ্ঠান ঘিরে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি প্রশাসন ও আয়োজক উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় বড় পরিসরে রাজনৈতিক কর্মসূচি আয়োজনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি বাধ্যতামূলক। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বিএনপি নির্ধারিত নিয়ম অনুসরণ করে আবেদন করে এবং অনুমতি লাভ করে। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতেও আইনসম্মত ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
সব মিলিয়ে, তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের অনুমতি পাওয়া বিএনপির রাজনৈতিক কর্মপরিকল্পনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এখন দলটির মূল লক্ষ্য নির্ধারিত তারিখে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা।