1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি, ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয়েছে শিশু সাজিদের মৃত্যু, দীর্ঘ উদ্ধার অভিযানের অবসান রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের ইচ্ছা, নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন অব্যাহত থাকবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অগ্রগতি হিসেবে দেখছে বিএনপি সরকারের উপদেষ্টাদের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন বিএনপির কর্মশালায় নির্বাচন প্রস্তুতি জোরদারের আহ্বান গণতান্ত্রিক চর্চার বিকাশে চলমান সংস্কারকে গুরুত্ব দিলেন পরিবেশ উপদেষ্টা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনসভা আয়োজনের নিয়মাবলি প্রকাশ ২৪তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী উদ্বোধন, শিল্পচর্চায় স্বকীয়তা অর্জনের ওপর জোর

দিনভর সীমাহীন দুর্ভোগ রাতে ধর্মঘট প্রত্যাহার পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ৩টি দাবি মেনে নিয়েছে সরকার

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৯
  • ১৪১ বার দেখা হয়েছে

দিনভর সাধারণ মানুষের সীমাহীন ভোগান্তি শেষে বুধবার মধ্যরাতে প্রত্যাহার করা হয়েছে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে ডাকা মালিক-শ্রমিকদের কর্মবিরতি। পরিবহন নেতাদের সঙ্গে টানা চার ঘণ্টার বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, মালিক-শ্রমিকদের ৯ দাবির মধ্যে তিনটি মেনে নিয়েছে সরকার। বাকিগুলোও বিবেচনা করা হবে।

কর্মবিরতির ডাক দেওয়া ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা গতকাল রাত ৯টার দিকে সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন উপ-কমিটির প্রধান আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে তার ধানমন্ডির সরকারি বাসভবনে বৈঠকে বসেন। এতে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন সচিব নজরুল ইসলাম, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (হাইওয়ে) ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান, স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান মীর শহিদুল ইসলাম, বিআরটিএ চেয়ারম্যান ড. কামরুল আহসান, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা।

রাত ১টার দিকে বৈঠক শেষে ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলী সাংবাদিকদের জানান, তাদের তিনটি দাবি মেনে নেওয়ায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সারাদেশে গাড়ি চলাচল করবে।

মালিক-শ্রমিকদের যে দাবিগুলো মানা হয়েছে সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, চালকরা এখন যে শ্রেণির লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন, তা দিয়ে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত গাড়ি চালাতে পারবেন। বর্তমানে হালকা যানের লাইসেন্স দিয়ে যারা বাস চালাচ্ছেন, তারা তা অব্যাহত রাখতে পারবেন। ফিটনেস হালনাগাদ না থাকা গাড়ির প্রযোজ্য জরিমানা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। জরিমানা মওকুফের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে। গাড়ির আকার-আকৃতি পরিবর্তনের জন্য সড়ক পরিবহন আইনে এক লাখ থেকে তিন লাখ টাকা জরিমানার যে বিধান রয়েছে তাও ৩০ জুন পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।

এদিকে কর্মবিরতির জেরে মহাদুর্ভোগের কবলে পড়ে সারাদেশ। ট্রাক, কাভার্ডভ্যান চলাচল বন্ধের ঘোষণা থাকলেও শ্রমিকদের বাধায় গতকাল বুধবার দেশের অধিকাংশ এলাকায় বাস চলেনি। সড়কপথে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বহু জেলা। কেবল দূরপাল্লার নয়, আন্তঃজেলা বাসও চলেনি। এতে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ। রেলস্টেশনগুলোতে যাত্রীর ঢল নামে। উপচেপড়া ভিড়ের কারণে ট্রেনযাত্রাও হয়ে ওঠে অগ্নিপরীক্ষার শামিল।

গত ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়েছে বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইন। গত বছর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনের মুখে আইনটি পাস হয়েছিল। এ আইনে সড়কে নিয়ম ভঙ্গের কারণে জরিমানা বেড়েছে হাজার গুণ পর্যন্ত, বেড়েছে কারাদণ্ড। জামিন অযোগ্য করা হয়েছে কয়েকটি ধারা। জরিমানাসহ অন্যান্য সাজা শিথিল করার দাবি তোলেন মালিক-শ্রমিকরা।

কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল বলেন, শাস্তির ভয়ে জনগণকে শাস্তি দেবেন না। শৃঙ্খলা ফেরাতে সড়ক পরিবহন আইন করা হয়েছে, কাউকে জেল-জরিমানা করতে নয়, শাস্তি দিতে নয়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার যে আইন করেছে, তা বাস্তবসম্মত হয়নি। আলাপ-আলোচনা করে আইন বাস্তবায়ন করা হলে শ্রমিকদের মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, তা হতো না।

গতকাল ভোর ৬টা থেকে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিকদের দেশব্যাপী কর্মবিরতি শুরু হয়। তবে তা রূপ নেয় ধর্মঘটে। প্রায় সব ধরনের পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় আগের রাত থেকেই। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মালিকানাধীন কিছু ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান চলেছে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়। শ্রমিকদের বাধায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিআরটিসির ট্রাকও চলতে পারেনি। এতে সবজি, খাদ্যসহ সব ধরনের পণ্য পরিবহন স্থবির হয়ে পড়ে। যার প্রভাব দেখা যায় নিত্যপণ্যের বাজারে।

আন্দোলনকারী শ্রমিকরা ভোর থেকে অবস্থান নেন বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে। গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাবতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় তাদের বাধায় রাজধানী থেকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ হয়ে যায়। কোনো কোনো চালক গাড়ি নিয়ে বের হলেও তাদের আটকে মুখে পোড়া মোবিল মাখিয়ে দেওয়া হয়। শ্রমিকদের অবস্থানস্থলে পুলিশ থাকলেও কোথাও সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।

গতকাল সারাদিনে কোনো বাস ছাড়েনি রাজধানীর মহাখালী টার্মিনাল থেকে। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের বাস বন্ধ থাকে। দক্ষিণাঞ্চলের কিছু বাস চললেও তা ছিল চাহিদার তুলনায় সামান্য। সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গাড়ি না চললেও বিকেলের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। কিছু বাস চলতে শুরু করে।

গতকাল রাজধানীর অভ্যন্তরীণ রুটেও বাস চলাচল ছিল কম। ফিটনেস, চালকের লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হালনাগাদ না থাকায় অনেক বাস রাস্তায় নামেনি। বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেখা যায় যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। কিন্তু বাস আসে দীর্ঘ সময় পরপর। মিরপুরের যাত্রী কাওসার আজম জানান, দু’দিন ধরেই এ অবস্থা। বাস পেতে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। যেগুলো আসে, সেগুলোও আগেই যাত্রীতে ঠাসা থাকে; তাই কোনোভাবেই ওঠা যায় না।

বিআরটিএ গতকালও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। তবে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হয়নি কাউকে। নূ্যনতম জরিমানা ও সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়। গতকাল ৩৫টি মামলায় ৩৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। নতুন আইনে কোনো মামলা দায়ের করেনি ট্রাফিক পুলিশ।

বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ভিড় বেড়েছে ট্রেনে। গতকাল ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রায় সব ট্রেনই ছিল যাত্রীতে বোঝাই। ঈদযাত্রার মতো ভিড় ছিল উত্তরবঙ্গ, জামালপুরগামী ট্রেনগুলোতে। আসন না পেয়ে বহু যাত্রী স্ট্যান্ডিং টিকিট নিয়ে গন্তব্যে রওনা হন। ট্রেনের ছাদেও ছিল ভিড়, যা ঈদ-উৎসবের সময় ছাড়া দেখা যায় না। কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার থেকেই ট্রেনে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ভিড় বেড়ে যায়।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com