পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দামের বিষয়ে দেশেজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এখনও পণ্যটি চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। কয়েক মাসেও পণ্যটির দর স্বাভাবিক হয়নি। ভোগান্তিতে আছেন ক্রেতারা। এই পরিস্থিতিতে বাজার দাম স্বাভাবিক রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ৪৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছে সরকার। এই সময়ে টিসিবির কম দামের পেঁয়াজ কালোবাজারে ছেড়েছে অসাধু চক্র।
এ নিয়ে মঙ্গলবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই চক্রের কিছু ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে টিসিবি। সমকালের প্রকাশিত ‘টিসিবির পেয়াজ কালোবাজারে’ শীর্ষক মূল প্রতিবেদনের পর সংশ্লিষ্টদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর পর ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকা ৫ ডিলারের মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে টিসিবি। সংস্থাটির ডিলার নীতিমালা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাদের আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির সমকালকে বলেন, ডিলারশিপ নীতিমালার আলোকে তাদের বিরূদ্ধে প্রথমিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে যাদের বিষয়ে অনিয়মের তথ্য প্রকাশ পেয়েছে তাদের মাধ্যমে বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর পরে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। উপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারলে ডিলারশিপ বাতিল ও জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে। এক কথায় ডিলাদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বিকল্প ডিলারদের দিয়ে এসব এলাকায় বিক্রি কার্যক্রম অব্যহত রাখা হয়েছে।
ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ আছে। এটি কবে চালু হতে পারে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, আগে ঢাকার বাজারে টিসিবি সরবরাহ ঠিক রাখা হবে। এর পরে আঞ্চলিক কার্যালয়ে সরবরাহ করা হবে।
এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়েনি। উল্টো কিছু দোকানি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন না। দোকানিরা জানান, যে কোন সময় অভিযান ও জরিমানা দিতে হতে পারে। অন্যদিকে চড়া দামের কারণে এখন পেঁয়াজ বেচাকেনা তুলনামূলক কম হচ্ছে। চড়া দামে পেঁয়াজ কিনে শেষ পর্যন্ত বিক্রি করতে না পারলে খেসারত দিতে হবে। এ কারণে ঝুঁকি নিয়ে পেঁয়াজ তুলছেন না তারা। এতে বাজারে ঘাটতি আরও বাড়ছে।
মঙ্গলবার খুচরায় দেশি পুরাতন পেঁয়াজ ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে পেঁয়াজসহ গাছের সরবাহ রাজধানীতে বাড়ছে। এতে পেঁয়াজসহ গাছের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকায় নেমে এসেছে। আর আমদানি করা মিয়ানমার ও পাকিস্তানের পেঁয়াজ ১০ টাকা বেড়ে এখন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। একই হারে বেড়ে চীন, মিসর ও তুরস্কের পেঁয়াজ ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারে পাইকারী আড়তে দেশি পেঁয়াজ ২২০ টাকা কেজি। আর মিয়ানমার ও পাকিস্তানের পেঁয়াজ ১৯০ টাকা দরে গত পাঁচ দিন ধরে বিক্রি হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার এক দিনের ব্যবধানে মিসর, তুরস্ক ও চীনা পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি।