ছবির শুটিংয়ের জন্য নিত্যনতুন লোকেশনের খোঁজে বাংলাদেশের পরিচালকেরা দেশের বাইরে যান। আর বাইরের পরিচালকেরা আসেন বাংলাদেশে। আজ শুক্রবার রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা কারওয়ান বাজারে দিব্যি শুটিং করেছেন ইরানের পরিচালক নার্গিস অবইয়ার। তিনি তাঁর নতুন ছবির শুটিংয়ের জন্য বাংলাদেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গা বেছে নিয়েছেন। জানা গেছে, এই ছবির নাম ‘শাবি কে মহ কমেল শোদ’। আর এই ছবির শুটিং শুরু হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে। এমনটাই জানালেন ছবির বাংলাদেশ অংশের সমন্বয়কারী মুমিত আল রশিদ।
মুমিত আল রশিদ কয়েক বছর ধরেই ইরানে আছেন। জানালেন, সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন। পাশাপাশি ফজল ফিল্ম উৎসবের সঙ্গেও যুক্ত আছেন তিনি। এসএ টিভিতে প্রচারিত ইরানি সিরিয়াল ‘ইউসুফ-জুলেখা’, ‘কারবালা কাহিনি’, ‘আসহাবে কাহাফ’, ‘ক্রুসেড’-এর অনুবাদকও তিনি। এ ছাড়া অনন্ত জলিলের নতুন ছবির সঙ্গে যুক্ত আছেন।
মুমিত জানান, ইরানি ছবি ‘শাবি কে মহ কমেল শোদ’-এর বাংলা অর্থ ‘যে রাতে চাঁদ পূর্ণতা পেয়েছিল’। ছবির ২০ ভাগ কাজ বাংলাদেশে হবে। ঢাকার ধানমন্ডি, কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেটে টানা আট দিন কাজ হবে
ছবির শুটিংয়ে বাংলাদেশকে বেছে নেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে মুমিত বলেন, ‘পরিচালক নার্গিস অবইয়ারের সঙ্গে যখন গল্পটি নিয়ে কথা হচ্ছিল, তখন বাংলাদেশের এই লোকেশনগুলোর নাম প্রস্তাব করি। এরপর এসব জায়গার ছবি দেখিয়েছি। তারপর বললেন, বাংলাদেশের অনেক জায়গার এখনো নিজস্বতা আছে। তাই প্রথম থেকে তিনি এখানে কাজ করার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন। বাংলাদেশে আসার পর তিনি অবাক হয়েছেন, যদিও শুরুর দিকে নাকি একটু কনফিউশনে ছিলেন। তাঁর মতে, ইরানে অনেক কিছুই এখন আরোপিত। কারওয়ান বাজার দেখার পর পরিচালক বলেছেন, এটা ইরানে হলে বদলে ফেলা হতো। বৈজ্ঞানিক উপায়ে কিছু করে ফেলা হতো, অথচ এই বাজারের নিজস্বতা এখনো বজায় রাখা হয়েছে। কামারপট্টি দেখে অবাক হয়েছে। বাংলাদেশের কিছু জায়গা ৪৭ বছর আগে যেমন ছিল, এখনো তেমনই রয়ে গেছে। ছবির গল্পের এটা দরকার ছিল। এসব কারণে শুটিংয়ের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নেওয়া হয়।’
বাংলাদেশের পাশাপাশি ‘শাবি কে মহ কমেল শোদ’ ছবির শুটিং হবে ইরান ও পাকিস্তানে। গল্পের প্রয়োজনে বাংলাদেশে এর শুটিং হচ্ছে। মুমিত আল রশিদ জানান, বাংলাদেশের পর শুটিং হবে পাকিস্তানে।
‘শাবি কে মহ কমেল শোদ’ একটি রোমান্টিক গল্পের ছবি। ছবিটি বাংলাদেশেও মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন এলনাজ শাকেরদুস্ত, হুতান শাকিবা, ফেরেশতে সাদরে উরাফায়ি।
ইরানি নির্মাতাদের মধ্যে অন্যতম নার্গিস অবইয়ার। গত বছর ৯০তম অস্কারের আসরে বিদেশি ভাষার ছবি বিভাগে প্রতিযোগিতা করেছে ইরান-ইরাক যুদ্ধ নিয়ে তাঁর তৈরি ‘ব্রেথ’। ছবিতে একটি শিশুর সুন্দর কল্পনা জগৎ দেখানো হয়। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় ১৯৮০ সালের ইরাক-ইরান যুদ্ধের অশান্তিতে। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন নার্গিস অবইয়ারের স্বামী মোহাম্মাদ হোসেইন কাশেমি। ‘শাবি কে মহ কমেল শোদ’ ছবির প্রযোজকও তিনি।