ঢাবি প্রতিবেদক
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের একদফা দাবিতে আগামীকাল শনিবার সারাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ ও ৬৪ জেলায় অনলাইন ও অফলাইন প্রতিনিধি বৈঠক এবং সন্ধ্যা ৬টায় পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ঘোষণা করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার প্রায় এক ঘণ্টা শাহবাগ মোড়ে সমাবেশ শেষে সন্ধ্যা সোয়া ৬ টায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার নতুন এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
আবু বাকের মজুমদার বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) আন্দোলনে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, শেকৃবিসহ অন্যান্য জায়গায় আমাদের ভাই-বোনদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের সভাপতি আমাদের সমন্বয়ককে চড়-থাপ্পড় মেরেছে। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমি সমন্বয়কদের অভয় দিয়ে বলতে চাই, কেউ যদি আমাদের ওপর হামলা চালায় তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) কুমিল্লায় এক সাংবাদিক বন্ধুর ওপর পুলিশ হামলা করেছে। তাছাড়া গতকাল কিছু অছাত্র-কুছাত্রদের নিয়ে এসে ঢাবি ক্যাম্পাস ভরে রাখা হয়েছিল। পরে শাহবাগে কিছু কুচক্রী মহল তাদেরকে দিয়ে আমাদের আন্দোলনকে বিতর্কিত করতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে। সাংবাদিকরা গত ৫ জুন থেকে নিরলসভাবে আমাদের দাবির পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা এই হামলার নিন্দা জানাই এবং জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাই।’
কর্মসূচি ঘোষণা করে আবু বাকের বলেন, ‘আগামীকাল (শনিবার) অনলাইন-অফলাইনে সব বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলা জেলায় জেলায় সমন্বয়কদের মধ্যে প্রতিনিধি বৈঠক করা হবে এবং সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
এর আগে আজ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ আন্দোলনের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থী সংগঠিত হতে থাকেন। এসময় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
শাহবাগে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘হামলা করে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘লাঠি দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘দালাল দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘ভয় দেখিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘টোকাই দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, ‘কোটা না মেধা? মেধা মেধা’, ‘দালালি না রাজপথ? রাজপথ, রাজপথ’, ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আপস না সংগ্রাম? সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের একদফা দাবিটি হলো– সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে নূন্যতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে।