মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। বৈঠকে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়, যেখানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন অর্থবহ হয়, তার জন্য এখন থেকেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কার্যত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় যেতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের আগে প্রশাসন যে নিরপেক্ষ থাকবে, সেই আস্থা জনগণের মধ্যে সৃষ্টি করা এখন সময়ের দাবি।”
প্রশাসনে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিএনপি মহাসচিব সচিবালয়ে কর্মরত কিছু কর্মকর্তাকে ‘চিহ্নিত ফ্যাসিস্টদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে তাঁদের অপসারণের দাবি জানান। তিনি বলেন, এসব কর্মকর্তাদের সরানো না হলে নির্বাচনের সুষ্ঠুতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।
বিচার বিভাগের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “যদিও বিচার বিভাগ একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, তবে সেখানে যারা স্বৈরাচার সরকারের দোসর হিসেবে পরিচিত, তাদের সরানো প্রয়োজন। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসকে বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ করেছি।”
পুলিশ প্রশাসনে পদোন্নতি ও নতুন নিয়োগ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, “নির্বাচনের সময় পুলিশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারকে নিরপেক্ষ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।”
উল্লেখ্য, এটি বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সরাসরি আলোচনার অংশ। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান রাজনৈতিক সংলাপের ধারাবাহিকতায় বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুরূপ কাঠামোতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম পরিচালনার দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে।
প্রসঙ্গত, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর আগে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতে প্রশাসনে প্রয়োজনীয় রদবদল এবং কর্মকর্তাদের নিয়োগ তাঁর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হবে। বিএনপির এই দাবি তারই ধারাবাহিকতায় গুরুত্ব পাচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিরোধী দলের এই ধরনের অবস্থান গ্রহণ এবং সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি নির্বাচনী পরিবেশে স্বচ্ছতা আনার একটি প্রচেষ্টা হলেও, চূড়ান্ত ফলাফল নির্ভর করবে সরকারের পদক্ষেপ এবং আন্তরিকতার উপর।