বাংলাদেশের শিল্পখাতের টেকসই উন্নয়নে একটি উদাহরণ হয়ে উঠছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ। প্রতিষ্ঠানটি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুসরণ করে এবং তাদের উৎপাদন প্রক্রিয়া, কর্মক্ষেত্রসহ সর্বত্র পরিবেশবান্ধব নীতি বাস্তবায়ন করছে। ওয়ালটন জিরো কার্বন নিঃসরণ, সাশ্রয়ী জ্বালানি এবং নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের শিল্পখাতে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।
সম্প্রতি ওয়ালটন তাদের নিজস্ব অর্থায়নে ১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ফ্লোটিং সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে। এই প্রকল্পটি গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে জলাশয়ের পানির ওপর স্থাপন করা হয়েছে এবং এটি দেশের মধ্যে বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত সর্ববৃহৎ সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ফ্লোটিং সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টটি নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে ওয়ালটনের নতুন মাইলফলক এবং টেকসই শিল্পোন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ওয়ালটনের ফ্লোটিং সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনেই সাহায্য করছে না, বরং মাছ চাষ, পানি সংরক্ষণ, বাষ্পীভবন হ্রাস এবং পরিবেশ রক্ষা-এও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পটি জাতীয় গ্রিডে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায়ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ওয়ালটন ইতোমধ্যে আরও দুটি জলাশয়ে এই ধরনের ফ্লোটিং সোলার প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
ফ্লোটিং স্ট্রাকচার: এই প্রকল্পে ব্যবহৃত স্ট্রাকচারগুলো ফুড-গ্রেড প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি, যা পানি ও জলজ প্রাণীর জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ।
টেকসই শক্তি: এই ফ্লোটিং সোলার সিস্টেমটি আগামী ২০ বছর ধরে কার্যকর ও টেকসইভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।
পানি সাশ্রয় ও পুনঃব্যবহার: ওয়ালটন তাদের ইটিপি সিস্টেমের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাতকৃত পানির প্রায় ৭৫% পুনঃব্যবহার করে, যা পানি সংরক্ষণে সহায়ক।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার ও আপসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে ওয়ালটন তাদের বর্জ্য কমাতে এবং সম্পদের পুনঃব্যবহার নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে।
কার্বন নিঃসরণ হ্রাস: ওয়ালটন তাদের উদ্যোগগুলির মাধ্যমে প্রায় ৯১১,৮২৩ মেট্রিক টন কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ হ্রাস করেছে।
কার্বন ফুটপ্রিন্ট হ্রাস: ওয়ালটন তাদের সামগ্রিক কার্বন ফুটপ্রিন্ট ১০% হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে।
ওয়ালটনের এই পদক্ষেপগুলির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিবেশবান্ধব নীতি গ্রহণের পাশাপাশি তা বাস্তবে প্রয়োগ করে, দীর্ঘমেয়াদে টেকসই শিল্প এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার একটি মডেল তৈরি করেছে। এই উদ্যোগগুলো শুধু বাংলাদেশের শিল্পখাতের জন্যই নয়, বরং অন্যান্য দেশেও টেকসই উন্নয়ন এবং পরিবেশ রক্ষা-র জন্য একটি সঠিক পথ দেখাচ্ছে।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ প্রমাণ করেছে যে, টেকসই শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার শিল্পখাতের জন্য শুধু পরিবেশবান্ধব নয়, বরং এটি দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসায়িক লাভ এবং সামাজিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।