অর্থনীতি ডেস্ক
দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ১৯তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাণিজ্যিক ও বৈশ্বিক প্রতিকূলতার মধ্যেও কোম্পানির পক্ষ থেকে ১৭৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড অনুমোদন দেওয়ায় শেয়ারহোল্ডাররা পরিচালনা পর্ষদকে ধন্যবাদ জানান। তারা দেশে উদ্ভাবনী প্রযুক্তিনির্ভর লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি উৎপাদন কারখানা স্থাপনের ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে হাইব্রিড পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম। সভায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীসহ বিপুল সংখ্যক সাধারণ শেয়ারহোল্ডার উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম আশরাফুল আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম, পরিচালক এস এম নূরুল আলম রেজভী, এস এম মঞ্জুরুল আলম অভি, স্বতন্ত্র পরিচালক শামসুল আলম মল্লিক, প্রফেসর মো. সাদিকুল ইসলাম ও আখতার মতিন চৌধুরী। এছাড়া কোম্পানির সংবিধিবদ্ধ নিরীক্ষক, কর্পোরেট গভর্নেন্স কমপ্লায়েন্স নিরীক্ষক, নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধি এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় অংশ নেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন পরিচালক এস এম রেজাউল আলম, তাহমিনা আফরোজ তান্না ও রাইসা সিগমা হিমাসহ আরও বহু শেয়ারহোল্ডার। সভা সঞ্চালনা করেন কোম্পানি সচিব মো. রফিকুল ইসলাম।
সভায় স্বাগত বক্তব্যে চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম বলেন, দেশীয় উদ্ভাবন, দক্ষ মানবসম্পদ ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পায়নের মাধ্যমে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডকে বৈশ্বিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে ওয়ালটন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় বাজারে নেতৃত্ব ধরে রাখার পাশাপাশি বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি করছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি আরও বলেন, টেকসই প্রবৃদ্ধি, উদ্ভাবনী গবেষণা, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে ওয়ালটন জাতীয় অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
ওয়ালটন হাই-টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, বৈশ্বিক বাণিজ্য অস্থিরতা ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে গত অর্থবছর কোম্পানির জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবে সময়োপযোগী কৌশল ও পরিচালন দক্ষতার মাধ্যমে ওয়ালটন চ্যালেঞ্জগুলো সফলভাবে মোকাবিলা করেছে। পরিচালন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, বাজার সম্প্রসারণ ও উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পণ্য বিক্রয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে।
সভায় ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব বিবরণী, নিরীক্ষা প্রতিবেদন, পরিচালনা পর্ষদের প্রতিবেদন, অবসর ও পুনঃনিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। পাশাপাশি ১৭৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড অনুমোদন পায়।
এছাড়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য সংবিধিবদ্ধ নিরীক্ষক হিসেবে মেসার্স এ কাশেম অ্যান্ড কোং, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস এবং কর্পোরেট গভর্নেন্স কমপ্লায়েন্স নিরীক্ষক হিসেবে মেসার্স মোহাম্মদ সানাউল্লাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস, চার্টার্ড সেক্রেটারি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্টসকে পুনঃনিয়োগ দেওয়া হয় এবং তাদের পারিশ্রমিক অনুমোদিত হয়।
সভায় বিনিয়োগকারীরা আশা প্রকাশ করেন, নতুন প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন ও গবেষণায় বিনিয়োগের ফলে ওয়ালটন ভবিষ্যতে একশরও বেশি দেশে তাদের বৈশ্বিক বাজার সম্প্রসারণে সফল হবে। কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ভবিষ্যতে উৎপাদন দক্ষতা, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে আরও উদ্যোগ নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।