আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে শিক্ষা, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে একমত হয়েছে। দুই দেশের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, এই সহযোগিতা ভবিষ্যতে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সৌহার্দ্য ও বোঝাপড়া আরও গভীর করবে।
সম্প্রতি মালদ্বীপে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. মো. নাজমুল ইসলাম এবং দেশটির ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ শাহিম আলী সাঈদের মধ্যে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সাক্ষাতে উভয়পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতবিনিময় করেন এবং বিদ্যমান সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আলোচনায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধর্মীয় সম্পৃক্ততা, ইসলামিক জ্ঞান বিনিময় এবং মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
দুই দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সহযোগিতা আরও কাঠামোবদ্ধ করতে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের প্রস্তাবও আলোচনায় উঠে আসে। এর মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ, ইসলামিক গবেষক এবং শিক্ষাবিদদের মধ্যে পারস্পরিক বিনিময় কার্যক্রম সহজ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন উভয় প্রতিনিধি।
মালদ্বীপের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ শাহিম আলী সাঈদ বলেন, মালদ্বীপ বাংলাদেশকে একটি ভ্রাতৃপ্রতিম ও নির্ভরযোগ্য অংশীদার দেশ হিসেবে দেখে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ইসলামিক জ্ঞান, যাকাত ব্যবস্থাপনা এবং সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচি আমাদের জন্য অনুকরণীয়। আমরা এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই।”
তিনি বাংলাদেশের মানবসম্পদ, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং দুই দেশের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশ সর্বদা মালদ্বীপের সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি জোরদারে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।” তিনি প্রস্তাব দেন, মালদ্বীপে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের ধর্মীয় বোঝাপড়া উন্নত করতে শুক্রবারের জুমার খুতবা বাংলায় অনুবাদ করা যেতে পারে। এতে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ঐক্য আরও শক্তিশালী হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আলোচনায় শিক্ষাক্ষেত্রেও সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়। হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের ভর্তি সুবিধা বাড়ানো যেতে পারে। মালদ্বীপের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী জানান, তাঁদের সরকার এই বিষয়ে আগ্রহী এবং বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের জন্য মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা করছে।
উভয় দেশই বিশ্বাস করে, শিক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ-মালদ্বীপ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে।