আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ ঘটনায় নারী ও শিশুসহ প্রায় ১০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। এক পরিবারের ১৮ সদস্যও এ হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার (২৯ অক্টোবর) থেকে ইসরায়েল পুনরায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানিয়েছে, রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী সেনারা যুদ্ধবিরতি চুক্তি পুনরায় কার্যকর করেছে। এর আগে গত রাতেই ইসরায়েল গাজার বিভিন্ন স্থানে ‘তাৎক্ষণিক ও শক্তিশালী’ হামলা চালায়।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, গাজার অন্তত ৩০টি স্থানে তারা বিমান হামলা চালিয়েছে, যেখানে হামাসের অবকাঠামো ও যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সেনাবাহিনীকে গাজায় ব্যাপক হামলার নির্দেশ দেন। তার আগে রাফা এলাকায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হন। তবে ওই হামলার জন্য কে দায়ী, তা নিশ্চিত করেনি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েল দাবি করেছে, ওই সেনা হত্যার মাধ্যমে হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। এছাড়া, মৃত ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ সময়মতো ফেরত না দেওয়ায় হামাস চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে বলেও অভিযোগ তোলে তারা। এর পরপরই নেতানিয়াহুর নির্দেশে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো গাজায় টানা বোমাবর্ষণ শুরু করে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানায়, ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ধ্বংসস্তূপে এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র। গাজা সিটি ও খান ইউনুস এলাকাগুলোতে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
হামলার পর ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর ঘোষণা করলেও হামাস এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। গত রাতে নেতানিয়াহুর নির্দেশে বিমান হামলার পর হামাস জানায়, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করায় তারা জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দেওয়া স্থগিত করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এ হামলা যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতা ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। গাজার মানবিক পরিস্থিতি ইতোমধ্যে চরম সংকটে পৌঁছেছে; হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ও জ্বালানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে, এবং সাধারণ মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছে।
সূত্র: আলজাজিরা