খেলাধুলা ডেস্ক
বাংলাদেশে টেনিসের প্রচার-প্রসার যথেষ্ট না থাকলেও চীনে বাংলাদেশি কোচরা দাপটের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। চীন, বর্তমানে বাংলাদেশের টেনিস কোচদের অন্যতম প্রধান গন্তব্য, যেখানে তারা সুযোগ, সম্মান, এবং ভালো আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন। বাংলাদেশের টেনিস কোচদের জন্য চীন একটি প্রধান কর্মক্ষেত্র হয়ে উঠেছে, এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন কোচের অভিজ্ঞতাও উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ কারেন বলেন, “টেনিস একটি ব্যয়বহুল খেলা এবং এখানে এটি পূর্ণ ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহণ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এই কারণে অনেক টেনিস কোচ এবং খেলোয়াড় চীনে কাজ করতে আগ্রহী। সেখানে কাজের সুযোগ এবং সম্মান অনেক বেশি।”
চীনের বিভিন্ন শহর যেমন গুয়াংজু, সাংহাই এবং বেইজিংয়ে প্রায় ৩০ জন বাংলাদেশি টেনিস কোচ কাজ করছেন। তাদের মধ্যে বিকেএসপির সাবেক শিক্ষার্থী আক্তার নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আক্তার বলেন, “চীনে আমরা সম্মান এবং সম্মানী উভয়ই পাচ্ছি, যা বাংলাদেশে অনেক কোচদের জন্য সম্ভব নয়। এখানে আমাদের পরিশ্রম এবং মেধার যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়।”
চীনে বাংলাদেশের নারী কোচদের সংখ্যা বাড়ছে। বিকেএসপির প্রথম নারী ব্যাচের শিক্ষার্থী রুমা বর্তমানে সাংহাইয়ে টেনিস কোচিং করছেন এবং তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, “এখানে বাচ্চাদের শেখানোর ক্ষেত্রে নারীদের ধৈর্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, তাই কোচিং একাডেমিগুলো নারীদের একটু বেশি প্রাধান্য দেয়।”
২০০৫ সালে প্রথম বাংলাদেশি কোচরা চীনে কোচিংয়ের জন্য গমন করেন। মুরাদ, আক্তার এবং মিজান সেই সময় চীনে আসেন এবং ধীরে ধীরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। মিজান বলেন, “আমরা চীনে আসার সময় একটি চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম, এবং এখন আমাদের জন্য এখানে অবস্থান করা সুবিধাজনক।”
চীনে কয়েকটি বাংলাদেশি কোচিং একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গুয়াংজুতে রিজভী এবং সাংহাইয়ে শাহনেওয়াজের একাডেমি বর্তমানে যথেষ্ট জনপ্রিয়। চীনে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে শাহনেওয়াজ আহমেদ বলেন, “চীনে সম্মান অনেক বড় একটি বিষয়। এখানে আমরা ভালো সম্মান পাই, যা অন্য দেশে হয়তো পাব না।”
এছাড়া, চীনে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশি কোচ আক্তার হোসেন ২০১3 থেকে 2018 পর্যন্ত চীনের অন্যতম সেরা নারী টেনিস খেলোয়াড় জাং ছিংকে প্রশিক্ষণ দেন। জাং 2023 সালে এশিয়ান গেমসে স্বর্ণপদক জিতেন এবং তার কোচ আক্তার এর জন্য গর্বিত। আক্তার বলেন, “আমার এক সময়ের শিষ্য বিশ্ব টেনিসে সফল হয়েছে, যা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।”
বাংলাদেশে চীনের টেনিস কোচিং পদ্ধতির গুরুত্বও বেড়েছে। সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত একটি আমন্ত্রিত টেনিস টুর্নামেন্টে চীনের দুটি খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তারা জানান, “এই টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে আমাদের মান যাচাই করতে পারলাম এবং টুর্নামেন্টের মানও অনেক ভালো।”
বাংলাদেশের টেনিস ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত এই ধরনের টুর্নামেন্টগুলোতে চীন থেকে বেশ কিছু খেলোয়াড় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অংশ নেন, যা বাংলাদেশের টেনিসের প্রতি চীনের আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়।