আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রায় তিন দশক আগে চীনসহ স্বাধীন গণমাধ্যমবিহীন এশীয় দেশগুলোর খবর প্রচারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত রেডিও ফ্রি এশিয়া (আরএফএ) এখন সংবাদ প্রচার কার্যক্রম বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়ন বন্ধের পর এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সংস্থাটি।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেডিও ফ্রি এশিয়া ইতোমধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি কর্মীকে ছাঁটাই বা অস্থায়ী ছুটিতে পাঠিয়েছে এবং সংবাদ প্রচারের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে কমিয়ে এনেছে। ১৯৯৬ সালে শুরু হওয়া এই সম্প্রচার কার্যক্রমে এত বড় ধরনের সংকট এটাই প্রথম।
মার্চ মাসে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মার্কিন সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত গণমাধ্যমগুলোর বরাদ্দে বড় পরিমাণে কাটছাট করেছে, যা আরএফএ’র জন্য সংকট সৃষ্টি করে। দীর্ঘদিন ধরে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে আরএফএকে একধরণের ‘গলার কাঁটা’ হিসেবে দেখা হচ্ছিল, বিশেষত ট্রাম্প যখন শি জিন পিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সচেষ্ট ছিলেন, ঠিক তখনই এই গুরুত্বপূর্ণ সংবাদমাধ্যমটির বন্ধ হওয়ার খবরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের বাজেট কাটছাট আদালতের মাধ্যমে কিছুটা প্রতিরোধ করা গেলেও, প্রায় এক মাস ধরে চলা মার্কিন সরকারের শাটডাউনের কারণে রেডিও ফ্রি এশিয়ার অর্থপ্রবাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি সামনে রেখে, আরএফএ ঘোষণা করেছে যে আগামী শুক্রবার থেকে তাদের সব ধরনের সংবাদ প্রচার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্ত রেডিও ফ্রি এশিয়ার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। ১৯৯৬ সালে চীন, তিব্বত, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনামসহ নানা দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে রেডিও ফ্রি এশিয়ার যাত্রা শুরু হয়। সেসময় থেকেই এটি এসব দেশগুলোতে সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
রেডিও ফ্রি এশিয়ার বন্ধ হওয়ার প্রক্রিয়া এবং এর ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন, এশীয় দেশগুলোর জনগণের জন্য এটি একটি বড় ধরনের তথ্য সংকট তৈরি করবে, কারণ এ ধরনের স্বাধীন মিডিয়া সংস্থা গুলোর মূল কাজ ছিল অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ সংবাদ সরবরাহ করা।
এখন পর্যন্ত, রেডিও ফ্রি এশিয়া জানিয়েছে, তাদের সমস্ত সংবাদ সম্প্রচার আগামী শুক্রবার থেকে বন্ধ হতে যাচ্ছে, যা তাদের দীর্ঘ সময়ের কাজের পরিণতি হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।