অর্থনীতি ডেস্ক
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও টেকসই সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে আজ শুক্রবার (১ নভেম্বর) থেকে দেশব্যাপী জাটকা ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং মৎস্য অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে টানা আট মাস মেয়াদি এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ২৫ সেন্টিমিটারের ছোট ইলিশ (জাটকা) আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে।
এর আগে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান–২০২৫’ পরিচালনা করা হয়। সেই সময় ডিমওয়ালা ইলিশ থেকে নিঃসৃত ডিমের পরিস্ফুটনের মাধ্যমে উৎপন্ন পোনা বর্তমানে উপকূলীয় নদ-নদী ও মোহনায় বিচরণ করছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব পোনা নিরাপদে বেড়ে উঠতে পারলে ভবিষ্যতে ইলিশ উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে।
মৎস্য অধিদপ্তর জানায়, মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ (সংশোধিত) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৮৫ অনুযায়ী এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে অনধিক দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, অনধিক পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক সম্পদ হিসেবে ইলিশ বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ এবং মোট মাছ উৎপাদনের প্রায় ১১ শতাংশ জুড়ে আছে। প্রতিবছর ইলিশ রক্ষায় সরকার নির্দিষ্ট সময়ে জাটকা ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে থাকে, যা ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।
এ বছরও নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, র্যাব ও স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করবে। মাঠপর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নিয়মিত তদারকি ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, সরকার ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের সহায়তায় বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে খাদ্য সহায়তা, বিকল্প কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ এবং ক্ষুদ্রঋণ সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাটকা সংরক্ষণ নিশ্চিত হলে আগামি মৌসুমে ইলিশ উৎপাদন নতুন রেকর্ড স্পর্শ করতে পারে।