অর্থনীতি ডেস্ক:
প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যামাজন এই সপ্তাহে প্রায় ১৪,০০০ কর্মী ছাঁটাই করেছে। কোম্পানির সিইও অ্যান্ডি জ্যাসি জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য খরচ কমানো বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রয়োগ নয়, বরং কর্মীদের কোম্পানির সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই করা।
অ্যান্ডি জ্যাসি বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে আমরা যে ঘোষণাটি দিয়েছি, তা পেছনে আর্থিক কারণ নেই। এআইও এর জন্য দায়ী নয়। এটি সংস্কৃতিগত কারণে নেওয়া হয়েছে।’’ জ্যাসি এ বছর অ্যামাজনের অভ্যন্তরীণ সংস্কৃতিকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছেন। তার লক্ষ্য হলো কর্মক্ষমতার মানদণ্ড উন্নত করা, শৃঙ্খলা জোরদার করা এবং আমলাতান্ত্রিকতা কমানো।
জ্যাসি আরও বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে অ্যামাজনের দ্রুত বৃদ্ধির কারণে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অনেক স্তর সৃষ্টি হয়েছে। এটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে ধীর করে দিয়েছে। চলমান এআই রূপান্তরের সময়ে, কোম্পানির জন্য দ্রুত গতিতে কাজ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’ তিনি উল্লেখ করেন যে, কখনও কখনও এমন স্তর কর্মীদের ‘মালিকানাবোধ’ দুর্বল করতে পারে এবং কাজের গতিকে ধীর করে।
যদিও সিইও জ্যাসি বলেছেন যে এআই ছাঁটাইয়ের কারণ নয়, কোম্পানির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বেথ গ্যালেত্তি একটি ব্লগ পোস্টে উল্লেখ করেছেন যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত পরিবর্তন কোম্পানিকে কর্মী সংখ্যা পুনর্বিন্যাস করতে প্ররোচিত করেছে। গ্যালেত্তি লিখেছেন, ‘‘এআই এই প্রজন্মে ইন্টারনেটের পর সবচেয়ে রূপান্তরমূলক প্রযুক্তি এবং এটি কোম্পানিগুলোকে নতুন উদ্ভাবন দ্রুত করতে সাহায্য করছে।’’
এবারের ছাঁটাই ২০২২ সালের শেষের দিকে ২৭,০০০ কর্মী ছাঁটাইয়ের পর অ্যামাজনের সবচেয়ে বড় কর্মী ছাঁটাই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি এবং পরিচালনাগত সংস্কৃতির পুনর্গঠন এমন পদক্ষেপকে জরুরি করে তুলেছে।
অ্যামাজন ছাঁটাইকে আন্তর্জাতিক ‘বিগ টেক’ কোম্পানির একটি প্রবণতার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গুগল ও মাইক্রোসফটও সম্প্রতি দ্রুত কাজের গতি নিশ্চিত করতে ব্যবস্থাপকদের স্তর কমানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, অ্যামাজনের এই সংস্কৃতিকেন্দ্রিক ছাঁটাই কর্মীদের দক্ষতা, দায়িত্বশীলতা ও কাজের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হতে পারে। তবে এ ধরনের পদক্ষেপ কর্মীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা এবং মনোবল কমানোর ঝুঁকিও তৈরি করতে পারে।