অর্থনীতি ডেস্ক

দেশের বাজারে সোনার দাম আবারও বেড়েছে। সর্বোচ্চ মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ১ হাজার ৬৮০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বৃদ্ধির কারণে এই সমন্বয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। নতুন দাম রোববার (২ নভেম্বর) থেকে কার্যকর হবে।

শনিবার (১ নভেম্বর) বাজুসের স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং বৈঠকে সোনার নতুন মূল্য নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকের পর কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর সোনার দাম কমানো হয়েছিল প্রতি ভরিতে ২ হাজার ৬১৩ টাকা। তারও আগে ৩০ অক্টোবর দাম বাড়ানো হয়েছিল ৮ হাজার ৯০০ টাকা। এভাবে অক্টোবর মাসে কয়েক দফায় সোনার দাম ওঠানামার পর আবারও তা বাড়ানো হলো। বাজুস জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার মূল্যবৃদ্ধি ও স্থানীয়ভাবে তেজাবী সোনার দামের পরিবর্তন এই সমন্বয়ের প্রধান কারণ।

সর্বশেষ ঘোষণায় ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৫৯৮ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৯৬ টাকা। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৩৬৫ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম হয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৮১ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ১৬৬ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৮০ টাকা।

এর আগে ৩১ অক্টোবরের ঘোষণায় ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ২ হাজার ৬১৩ টাকা কমিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ লাখ ৯৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ২ হাজার ৫০৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৯০ হাজার ৯৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের সোনায় ২ হাজার ১৪৬ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭১৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনায় ১ হাজার ৮৩১ টাকা কমিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার ১৪ টাকা।

বাজুস সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক সপ্তাহে সোনার দাম প্রতি আউন্সে গড়ে ২০–২৫ ডলার বেড়েছে। এর প্রভাবে দেশের বাজারেও তেজাবী সোনার দাম বৃদ্ধি পায়। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্থানীয় বাজার স্থিতিশীল রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

সোনার দামের এই ঊর্ধ্বগতি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি গহনা ক্রেতাদেরও প্রভাবিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মুদ্রা বিনিময় হারের পরিবর্তন এবং আমদানি ব্যয়ের কারণে স্থানীয় বাজারে সোনার দামের ওপর চাপ অব্যাহত থাকতে পারে।

অন্যদিকে, সোনার দামের এই পরিবর্তনের বিপরীতে রুপার দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৪ হাজার ২৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের ৪ হাজার ৪৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬০১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনগুলোতে দেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়বে। এ কারণে ভোক্তাদের সতর্কভাবে ক্রয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।