খেলাধুলা ডেস্ক
দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে ভারত। এ জয়ে তারা পেয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) নির্ধারিত ৪৪ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৫ কোটি টাকার সমপরিমাণ। এই সাফল্যের পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) চ্যাম্পিয়নদের জন্য অতিরিক্ত পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে।
বিসিসিআই জানিয়েছে, নারী দলের ঐতিহাসিক সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে মোট ৫১ কোটি রুপি, অর্থাৎ প্রায় ৭১ কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই অর্থ খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ এবং সহায়ক দলের সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।
বিসিসিআইয়ের সচিব দেবজিত সাইকিয়া নারী দলের এই অর্জনকে ভারতের ক্রিকেটের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় বলে উল্লেখ করেছেন। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এই জয় শুধু একটি ম্যাচ বা টুর্নামেন্ট জয়ের বিষয় নয়, এটি ভারতের নারী ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের সূচনা করবে।”
তিনি আরও বলেন, এই সাফল্য দেশের তরুণ ও উঠতি নারী ক্রিকেটারদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। “এই অর্জন পরবর্তী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস জোগাবে এবং ভারতের নারী ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে,” যোগ করেন সাইকিয়া।
বিশ্বকাপ আয়োজনের আগে আইসিসি নারী ক্রিকেটের পুরস্কার কাঠামোয় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনে। সদ্য সমাপ্ত আসরে মোট প্রাইজমানি ধরা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫৩ কোটি টাকা), যা ২০২২ সালের সর্বশেষ নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের তুলনায় প্রায় চার গুণ বেশি।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এবারের নারী বিশ্বকাপের পুরস্কার অর্থ পুরুষদের ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের চেয়েও বেশি ছিল। সেই আসরে মোট প্রাইজমানি নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ মিলিয়ন ডলার।
আইসিসির এই সিদ্ধান্তকে ক্রিকেটবিশ্লেষকরা নারী ক্রিকেটে আর্থিক সমতা ও স্বীকৃতির পথে বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরস্কারের এই বৃদ্ধি বিশ্বজুড়ে নারী ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ ও বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
ভারতের এই সাফল্যকে দেশটির ক্রীড়া মহল নারী ক্রিকেটের ক্রমবর্ধমান উন্নতির প্রতিফলন হিসেবে দেখছে। টুর্নামেন্ট জুড়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স, কৌশলগত পরিকল্পনা এবং দলীয় ঐক্যের ফল হিসেবেই এসেছে এই ঐতিহাসিক অর্জন।
বিশ্বকাপ জয়ে ভারতীয় দল কেবল একটি ট্রফি জিতেনি, বরং নারী ক্রিকেটে নতুন এক মানদণ্ড স্থাপন করেছে — যা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও বড় সাফল্যের পথ উন্মুক্ত করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।