খেলাধুলা ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় প্রথমবারের মতো ৪৮টি দেশ নিয়ে বসছে ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আসর। চার মহাদেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই আয়োজনকে সামনে রেখে আগেভাগেই শুরু হয়েছে ফুটবল উৎসবের আমেজ। ইতোমধ্যে টুর্নামেন্টে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে ২৮টি দেশ। তাদের মধ্যে ২২ দেশের নতুন হোম জার্সি উন্মোচন করেছে জার্মান ক্রীড়া সরঞ্জাম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস।
অ্যাডিডাস জানায়, প্রতিটি জার্সিতে দেশগুলোর নিজস্ব ঐতিহ্য, আধুনিক নকশা ও উদ্ভাবনের সমন্বয় করা হয়েছে। যেসব জাতীয় ফেডারেশনের সঙ্গে কোম্পানিটির দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে, সেসব দেশের জার্সি প্রকাশ করা হয়েছে। যোগ্যতা অর্জন সম্পন্ন হলে আরও কয়েকটি দেশ পরবর্তী ধাপে এই তালিকায় যুক্ত হতে পারে।
নতুন জার্সিগুলোর নকশায় আর্জেন্টিনার ঐতিহ্যবাহী আকাশি-সাদা ডোরাকাটা ধারা, জার্মানির জ্যামিতিক নকশা এবং জাপানের সূর্যোদয়ের প্রতীকী রঙের সংমিশ্রণসহ প্রতিটি দেশের নিজস্ব পরিচয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। অ্যাডিডাসের মতে, এসব ডিজাইন কেবল পোশাক নয়, বরং ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ফুটবলীয় চেতনার প্রতিফলন।
নতুন কিটে ব্যবহার করা হয়েছে সর্বাধুনিক “ক্লাইমাকুল+” প্রযুক্তি, যা খেলোয়াড়দের শারীরিক আরাম নিশ্চিত করবে। বিভিন্ন আবহাওয়ায় উপযোগী রাখার জন্য প্রতিটি জার্সির কাপড় এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে শরীরে বায়ু চলাচল সহজ হয় এবং খেলোয়াড়রা ম্যাচ চলাকালীন সময়েও স্বস্তি বজায় রাখতে পারেন।
অ্যাডিডাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জার্সিগুলোর সূক্ষ্ম নকশায় যোগ করা হয়েছে লেন্টিকুলার ক্রেস্ট ও অভ্যন্তরীণ লুকানো লেখনী—যা প্রতিটি কিটে একটি বিশেষ পরিচয় ও অনুসন্ধানের আবহ তৈরি করেছে। এই বৈশিষ্ট্যগুলো কেবল ম্যাচের সময় নয়, বরং মাঠের বাইরেও ভক্তদের সঙ্গে দলগুলোর সম্পর্কের প্রতীক হয়ে উঠবে।
অ্যাডিডাস ফুটবলের জেনারেল ম্যানেজার স্যাম হ্যান্ডি বলেন, “জাতীয় দলের জার্সি শুধু একটি পোশাক নয়; এটি ঐক্য, গর্ব এবং আত্মপরিচয়ের প্রতীক। আমাদের ডিজাইনগুলো প্রতিটি দেশের ঐতিহ্যকে সম্মান জানায় এবং এমন এক বৈশ্বিক উদযাপনের বার্তা দেয় যেখানে প্রতিটি ভক্ত একই গল্পের অংশ হয়ে ওঠে।”
বিশ্বকাপ ফুটবল সব সময়ই বিশ্বব্যাপী সংস্কৃতি, ইতিহাস ও মানবিক সংযোগের এক মেলবন্ধন। ২০২৬ সালের এই আয়োজন তিনটি আয়োজক দেশে অনুষ্ঠিত হবে, যা ভৌগোলিকভাবে সবচেয়ে বড় বিশ্বকাপ হিসেবে ইতিহাসে স্থান পাবে। আয়োজক দেশগুলোর বিভিন্ন আবহাওয়া ও ভৌগোলিক বৈচিত্র্য বিবেচনা করেই জার্সি প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যাডিডাস।
২০২৬ বিশ্বকাপের মূল পর্ব শুরু হবে আগামী বছরের ১১ জুন এবং চলবে ১৯ জুলাই পর্যন্ত। টুর্নামেন্টের ড্র অনুষ্ঠিত হবে ৫ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে। বাছাইপর্বের খেলাগুলো শেষ হওয়ার পর চূড়ান্ত ৪৮ দলের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এরই মধ্যে উন্মোচিত জার্সিগুলো আগামীকাল (৬ নভেম্বর) থেকে অ্যাডিডাসের নিজস্ব ওয়েবসাইটে বিক্রির জন্য উন্মুক্ত হবে। প্রতিষ্ঠানটি আশা করছে, বৈচিত্র্যময় নকশা ও প্রযুক্তিনির্ভর এই নতুন সংগ্রহ আসন্ন বিশ্বকাপকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী সমর্থকদের মধ্যে আরও উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করবে।