1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণা দিল বিএনপি গুলিবিদ্ধ স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারীদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু নির্বাচন বানচাল করার প্রচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে: প্রেসসচিব রাতেই চালু হচ্ছে মেট্রো রেল বাংলাদেশ পুলিশের উচ্চপর্যায়ের ৩৯ কর্মকর্তার বদলি আসন্ন ঢাকা-১০ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ, ঢামেকে চিকিৎসাধীন তফসিল ঘোষণায় সহযোগিতার প্রস্তুতি জানাল জামায়াতে ইসলামী ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝেই নির্বাচনের ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন উত্তাপ ল্যুভ মিউজিয়ামে চুরি: তদন্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুতর ত্রুটি উদঘাটন

মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নিয়ে তীব্র প্রশ্ন, ঝুঁকিতে বিলিয়ন ডলারের রাজস্ব

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৮ বার দেখা হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ক্ষমতা সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় বুধবার সুপ্রিম কোর্টে তীব্র প্রশ্নের মুখে পড়েছে তার প্রশাসন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মামলার রায় ট্রাম্পের রাজনৈতিক এজেন্ডা ছাড়াও বিশ্ব বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

বিচারপতিদের সংখ্যাগরিষ্ঠ, যাদের মধ্যে একাধিক রক্ষণশীলও রয়েছেন, হোয়াইট হাউজের আমদানি শুল্ক আরোপের যুক্তি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাত পুনরুদ্ধার ও বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এসব শুল্ক প্রয়োজনীয় হলেও, বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন যে তিনি সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছেন।

একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি অঙ্গরাজ্য এই পদক্ষেপগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট কার্যত করের সমান শুল্ক আরোপ করে কংগ্রেসের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, কর আরোপের ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে, প্রেসিডেন্টের নয়।

নয় সদস্যবিশিষ্ট সুপ্রিম কোর্টে ছয়জন রক্ষণশীল বিচারপতি থাকলেও, শুনানিতে বেশ কয়েকজন প্রেসিডেন্টের পদক্ষেপ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। বিচারপতি অ্যামি কনি ব্যারেট প্রশ্ন তোলেন, “তাহলে কি প্রতিটি দেশকেই প্রতিরক্ষা ও শিল্পের জন্য হুমকি বিবেচনা করে শুল্ক আরোপ করতে হয়েছে?”

মামলাটি ১৯৭৭ সালের ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট (আইইইপিএ) আইনকে ঘিরে। এই আইনে প্রেসিডেন্টকে জাতীয় জরুরি অবস্থায় বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প এই আইন ব্যবহার করে চীন, মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেন, যুক্তি দেন যে এসব দেশ থেকে পাচার হওয়া মাদক যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘জরুরি অবস্থা’ তৈরি করেছে।

পরে এপ্রিল মাসে তিনি একই আইনের আওতায় প্রায় সব দেশের পণ্যের ওপর ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের নির্দেশ দেন। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, আমদানির পরিমাণ রপ্তানির তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় এটি জাতীয় অর্থনীতির জন্য ‘অস্বাভাবিক হুমকি’।

সরকারের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল জন সাউয়ার যুক্তি দেন, প্রেসিডেন্টের শুল্ক আরোপের ক্ষমতা আইইইপিএ আইনের ‘নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতার’ মধ্যেই পড়ে। তিনি বলেন, “এটি কর নয়, বরং নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক।” তবে বিচারপতি সোনিয়া সোটোমেয়ার পাল্টা মন্তব্যে বলেন, “আপনি বলছেন শুল্ক কর নয়, কিন্তু বাস্তবে সেটাই তো কর।”

অন্যদিকে রক্ষণশীল বিচারপতি নিল গোরসাচ প্রশ্ন তোলেন, যদি আদালত ট্রাম্পের পক্ষে রায় দেয়, তবে ভবিষ্যতে কংগ্রেস বিদেশি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পুরোপুরি ত্যাগ করতে বাধ্য হবে না তো? তিনি আরও বলেন, “আইইইপিএ আইনে এমন কোনো শব্দ নেই যা প্রেসিডেন্টকে অসীম শুল্ক ক্ষমতা প্রদান করে।”

এই মামলায় প্রশাসনের পক্ষে রায় গেলে প্রেসিডেন্ট ভবিষ্যতে যেকোনো দেশ ও যেকোনো পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করতে পারবেন—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস। অন্যদিকে, প্রশাসন সতর্ক করেছে যে আদালত যদি তাদের শুল্ক ক্ষমতা অবৈধ ঘোষণা করে, তবে যুক্তরাষ্ট্র ‘নিষ্ঠুর বাণিজ্য প্রতিশোধের’ মুখে পড়বে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

ওয়েলস ফার্গোর বিশ্লেষকদের হিসাব অনুযায়ী, মামলাটির প্রভাব পড়তে পারে ইতোমধ্যেই আদায়কৃত প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলারের শুল্ক অর্থে, যা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মোট শুল্ক আয়ের প্রায় অর্ধেক। যদি রায় দিতে বিলম্ব হয়, এ অঙ্ক এক ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে বলেও তারা জানিয়েছেন।

শুনানির সময় আদালতের বাইরে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। সারাহ ওয়েলস ব্যাগস নামের একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনাকারী সারাহ ওয়েলস বলেন, শুল্কের কারণে তার প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার ডলার অতিরিক্ত দিতে হয়েছে, ফলে পণ্য আমদানি বন্ধ ও কর্মী ছাঁটাই করতে হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে আদালত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমা নির্ধারণ করবে।

প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে বুধবারের শুনানি, যা বিচারপতিদের নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। আদালত সাধারণত এ ধরনের জটিল বিষয়ে রায় দিতে কয়েক মাস সময় নেয়। তবে পর্যবেক্ষকদের ধারণা, মামলার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় সুপ্রিম কোর্ট এবার দ্রুত সিদ্ধান্ত দিতে পারে।

এই রায়ের মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অর্থনৈতিক ‘জরুরি ক্ষমতা’ সীমিত না সম্প্রসারিত হবে—তা নির্ধারিত হবে আসন্ন মাসগুলোতে। এর ফলাফল শুধু ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য নয়, বরং বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থার ওপরও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com