বিনোদন ডেস্ক
বলিউড অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মালাইকা আরোরা সম্প্রতি প্রকাশিত র্যাপার হানি সিংয়ের নতুন মিউজিক ভিডিও ‘চিলগাম’-এ অভিনয় ও নাচের মাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। ভিডিওটি প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মালাইকা ও হানি সিংকে ঘিরে চলছে তীব্র বিতর্ক।
ভিডিওটি প্রকাশের পর দর্শকদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, এতে অশালীন ও অপ্রাসঙ্গিক অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষ করে মালাইকা আরোরার কিছু নৃত্যভঙ্গি—যেমন চুইংগাম চিবানো বা জিভ বের করে নাচের দৃশ্য—অনেকে ‘অশালীন’ বলে মন্তব্য করেছেন। সামাজিক মাধ্যমের একাধিক পোস্টে ব্যবহারকারীরা লিখেছেন, “নাচে কোনো শৈল্পিক আবেদন নেই, কেবল অশালীনতার প্রদর্শন।”
অন্যদিকে, সমালোচনার পাশাপাশি কিছু দর্শক হতাশাও প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একসময় ‘ছাইয়া ছাইয়া’ ও ‘থামা থামা’ গানের মতো জনপ্রিয় আইটেম গানে যে মানসম্পন্ন পারফরম্যান্সে মালাইকা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন, নতুন ভিডিওটিতে সেই মান বজায় রাখতে পারেননি। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, গানটির কোরিওগ্রাফি ও নাচের ধরন তার আগের কাজের তুলনায় দুর্বল এবং শৈল্পিকতার ঘাটতি রয়েছে।
ভিডিওতে ব্যবহৃত নাচের ধরনটি মূলত ‘টোয়ার্কিং’—যেখানে নৃত্যশিল্পী দেহের নিম্নাংশ, বিশেষ করে নিতম্বের নড়াচড়ার মাধ্যমে ছন্দ তৈরি করেন। দক্ষিণ এশীয় দর্শক সমাজে এই ধরনের নাচ সাধারণত বিতর্কিত হিসেবে বিবেচিত হয়। অনেক দর্শকই মন্তব্য করেছেন, এই নাচের ধরনে মালাইকা নিজেকে স্বাচ্ছন্দ্যে প্রকাশ করতে পারেননি, ফলে পুরো পারফরম্যান্সটি অপ্রাকৃতিক মনে হয়েছে।
বিতর্কের প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে কেউ কেউ ভিডিওটি নিষিদ্ধ করার দাবিও তুলেছেন। তাদের যুক্তি, গানটির দৃশ্য ও অঙ্গভঙ্গি তরুণ দর্শকদের জন্য অনুপযুক্ত এবং এটি সাংস্কৃতিক মানদণ্ডের পরিপন্থী। অপরদিকে, কিছু মন্তব্যে বলা হয়েছে, আধুনিক সংগীত ভিডিওতে আন্তর্জাতিক প্রভাবের কারণে এমন নাচের ধরন ক্রমেই প্রচলিত হচ্ছে, তবে এর উপস্থাপনায় ভারসাম্য রক্ষা জরুরি।
তুলনামূলকভাবে অনেক দর্শক মনে করছেন, এই ভিডিওতে হানি সিং ও মালাইকার সমন্বয়ে আগের জনপ্রিয় আইটেম গানের মতো সুষম কোরিওগ্রাফি, গানের শক্তিশালী বিট বা অভিনয়ের সংযম পাওয়া যায়নি। কেউ কেউ উল্লেখ করেছেন, “সুনিধি চৌহানের ‘আঁখ’ বা তামান্না ভাটিয়ার ‘গফুর’ গানের মতো পরিকল্পিত নাচ ও শৈল্পিক পরিবেশনা চিলগাম-এ অনুপস্থিত।”
ভিডিওটি প্রকাশের পর এখনো পর্যন্ত শিল্পী বা প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে বিতর্কের পরেও ভিডিওটি ইউটিউব ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে দ্রুত ভিউ অর্জন করছে, যা প্রমাণ করে যে বিতর্ক সত্ত্বেও দর্শকদের কৌতূহল ভিডিওটির প্রতি প্রবল রয়েছে।
সমালোচকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বলিউডের মিউজিক ভিডিওগুলোতে অতি আধুনিক নাচের ধরন ও উপস্থাপনার ওপর জোর বাড়ছে, যা একদিকে দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করছে, অন্যদিকে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নও তুলছে। ‘চিলগাম’ বিতর্ক তাই শুধু মালাইকা আরোরার পারফরম্যান্স নয়, বরং বলিউডের নান্দনিকতার পরিবর্তন নিয়েও নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।